টাঙ্গাইলের বাসাইলে একটি সড়ক পাকা করার লক্ষ্যে মাটি খুঁড়ে দুই বছর ধরে ফেলে রেখেছে ঠিকাদার। মাটি খোঁড়ায় দীর্ঘদিন ধরে যান চলাচলসহ মানুষের যাতায়াত বন্ধ রয়েছে এই সড়ক দিয়ে। এতে ঝোপঝাড়ে ছেয়ে গেছে পুরো সড়ক। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এ সড়কে যাতায়াত করা বিভিন্ন গ্রামের মানুষের। এটি বাসাইল উপজেলার কাশিল বটতলা-আইসড়া সড়কের ঝনঝনিয়া কলেজের দক্ষিণপাশে সিরাজ মেম্বারের বাড়ি থেকে মসজিদের সামনের সড়ক।
জানা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের ঝনঝনিয়া কলেজের দক্ষিণ পাশ থেকে মসজিদের সামনের ৪৪৫ মিটার সড়কের পাকা করা কাজ পায় তুষি এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নির্মাণে প্রায় ৫৮ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া সড়কটি দুই বছর ধরে মাটি খুঁড়ে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ড্রেজার দিয়ে মাটি ভরাটের উদ্দেশে সড়কের মাঝখান থেকে মাটি কেটে দুই পাশে ভরাট করা হয়েছে। এর ফলে যানবাহন চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে পড়েছে। চলাচলের অনুপযোগী থাকায় পুরো সড়কে ঝোপঝাড়ে ছেয়ে গেছে। এখন দেখে বোঝার উপায়ই নেই এটা সড়ক নাকি খাল।
সড়কটি দিয়ে উপজেলার ময়থা, তিরঞ্চ, ঝনঝনিয়া হাজী বাড়ি, তালুকদার বাড়ি, পশ্চিমপাড়া, মাদ্রাসা বাড়িসহ বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ যাতায়াত করেন। এ ছাড়াও কয়েকটি চকের ইরি-বোরো ধান ও সরিষাসহ উৎপাদিত পণ্য বাড়িতে নিতে সড়কটি ব্যবহার করা হয়। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আইয়ূব খান বলেন, ‘প্রায় দই বছর আগে ভালো সড়ক কেটে খাল ও পুকুরের মতো বানিয়ে রেখেছে। এখন এই সড়কের ওপর দিয়ে যানচলাচলসহ যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়াও কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য হাট-বাজারেও নিতে পারছেন না। সড়কে জঙ্গলে ছেয়ে গেছে। এখন অন্যের বাড়ির ভেতর দিয়ে পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। সড়কটি দ্রুত পাকা করার দাবি জানাচ্ছি।’
আমানত নামের এক কৃষক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি গর্ত করে রাখা হয়েছে। আমরা কোনোভাবে চলতে পারছি না। রাস্তাটি আগেই ভালো ছিল। এখন বাড়ি থেকে কৃষিপণ্য বাজারে নিয়েও বিক্রি করা যাচ্ছে না। সড়কে ঝোপঝাড়ে ছেয়ে গেছে। কয়েকটি গ্রামের মানুষ খুবই সমস্যায় আছে। তাই সড়কটি দ্রুত পাকা করার দাবি করছি।’
আমেনা বেগম নামের এক নারী বলেন, ‘এমনভাবে সড়কে গর্ত করা হয়েছে এখন যাতায়াতের মতো উপায় নেই। প্রায় দুই বছর ধরে খুবই সমস্যায় আছি। ছেলে-মেয়েদের স্কুলে নিয়ে যেতেও কষ্ট হচ্ছে। রাস্তাটি পাকা হলে খুবই সুবিধা হয়।’
ফুলকী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামছুল আলম বিজু বলেন, ‘সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ। প্রায় দুই বছর আগে ঠিকাদার ড্রেজার দিয়ে মাটি ভরাটের লক্ষ্যে সড়কের মাঝখান থেকে মাটি সরিয়ে দুইপাশে দিয়ে রেখেছে। এ জন্য যানচলাচলসহ মানুষের যাতায়াতও বন্ধ রয়েছে। যাতায়াত বন্ধ থাকায় পুরো সড়কে জঙ্গলে ছেয়ে গেছে। সড়কটির বিষয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বারবার উত্থাপন করেও কোনও কাজ হচ্ছে না।’
উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল জলিল বলেন, ‘ঠিকাদার নির্দিষ্ট সময়ে কাজটি শুরু করতে পারেনি। কাজের কোনও অগ্রগতি ছিল না। এ জন্য কাজটি বাতিল করা হয়েছে। খুব দ্রুতই পূনরায় রি-টেন্ডার করা হবে।’