নিহত ১৭ যাত্রীর মধ্যে ১৬ জনের পরিচয় মিলেছে, স্বজনদের আহাজারি
বাংলাদেশ

নিহত ১৭ যাত্রীর মধ্যে ১৬ জনের পরিচয় মিলেছে, স্বজনদের আহাজারি

ঝালকাঠিতে যাত্রীবাহী বাস পুকুরে পড়ে নিহত ১৭ যাত্রীর মধ্যে ১৬ জনের পরিচয় মিলেছে। শনিবার (২২ জুলাই) স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ১৬ লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে জেলা প্রশাসন। বাকি একজনের লাশ এখনও শনাক্ত হয়নি। তার লাশ সদর হাসপাতালের নিচতলার মেঝেতে রাখা হয়েছে। আহত ৩৫ জনের মধ্যে ৩১ জনকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও চার জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদসংলগ্ন ছত্রকান্দা এলাকায় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিকালে লাশ নিতে আসা স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে হাসপাতালের পরিবেশ।

নিহতরা হলেন—পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া পৌর এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য ভান্ডারিয়ার সালাম মোল্লা (৬০), তার ছেলে শাহীন মোল্লা (২৫), ভান্ডারিয়া উপজেলার উত্তর শিয়ালকাঠি এলাকার রাবেয়া বেগম (৮০), একই উপজেলার পশুরবুনিয়া এলাকার জালাল হাওলাদারের শিশুকন্যা সুমাইয়া (৬), রিজার্ভ পুকুরের পাড় এলাকার রহিমা বেগম (৬০), তার ছেলে আবুল কালাম হাওলাদার (৪৫), একই এলাকার সাদিয়া বেগম (২২), ভান্ডারিয়া পৌর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তারেক রহমান (৪৫), কাঁঠালিয়া উপজেলার বাঁশবুনিয়া গ্রামের সালমা আক্তার মিতা (৪২), রাজাপুর উপজেলার নিজামিয়া এলাকার নজরুল ইসলামের মেয়ে খুশবু আক্তার (১৭), একই এলাকার খাদিজা বেগম (৪৩), দক্ষিণ রাজাপুরের বলাইবাড়ী এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মো. নয়ন (১৬), একই উপজেলার মো. রিপনের স্ত্রী আইরিন আক্তার (২২), তার শিশুকন্যা রিপা মনি (২), রাজাপুরের আহসান খানের ছেলে জাহাঙ্গীর খান (৫৫) ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরবোয়ালিয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে আবদুল্লাহ (৮)।

জেলা সিভিল সার্জন এইচ এম জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘নিহত একজনের লাশ এখনও শনাক্ত হয়নি। আহতদের চিকিৎসা চলছে।’

জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল ‍নিঝুম বলেন, ‘স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ জনের মধ্যে ১৬ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি একজনের লাশ শনাক্তের পর হস্তান্তর করা হবে।’

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল বলেন, ‘নিহতদের লাশ দাফনের জন্য আইজিপি তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এক লাখ টাকা দিয়েছেন। ওই টাকা নিহতদের স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’ 

ঝালকাঠির সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিলন চাকমা বলেন, ‘জেলার ত্রাণ শাখা থেকে নিহতদের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য ১৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নিহতদের লাশ গ্রামে পৌঁছে দিতে সহায়তা করছে জেলা পুলিশ।’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে ছেড়ে আসা বরিশালগামী ‘বাসার স্মৃতি’ পরিবহনের একটি বাস ছত্রকান্দা এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে পুকুরে পড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ এবং স্থানীয়রা উদ্ধার অভিযান শুরু করে। সেইসঙ্গে নিহতদের লাশ ও আহতদের উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পাঠায়।

Source link

Related posts

টাঙ্গাইলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

News Desk

আদালত চত্বর থেকে যেভাবে জঙ্গি ছিনতাই

News Desk

কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি

News Desk

Leave a Comment