নির্বাচনি প্রচারণায় হামলা, ভাঙচুর, গুলি ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ এনে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোরশেদ আলম এবং স্বতন্ত্র কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া।
রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন দুই প্রার্থী। চৌমুহনী মোরশেদ আলম কমপ্লেক্সে সংবাদ সম্মেলনে নোয়াখালী-২ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোরশেদ আলম লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার দুপুরে সেনবাগের ছমিরমুন্সির হাটে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনি প্রচার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক। তিনি তার বক্তব্যে, আমাকে রক্তাক্ত করে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন। যার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আমি হলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং নৌকার প্রার্থী। আমার দলের সাধারণ সম্পাদক নৌকার জন্য কাজ না করে স্বতন্ত্রের জন্য কাজ করছেন। তিনি আমাকে রক্তাক্ত করে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। আমি এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক বলেন, ফেসবুকে একজন কর্মকর্তার নিউজের একটি বক্তব্যের সূত্র ধরে আমি একটি কথা বলেছিলাম। কিন্তু নৌকা প্রতীকের লোকজন সে সংবাদের অংশটুকু আমার বলে এবং বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার করছেন। যা একবারে ভিত্তিহীন।
অপরদিকে, নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতীক পাওয়ার পর আমরা কাঁচি প্রতীকের প্রচার-প্রচারণা শুরু করি। প্রচরণার শুরু থেকে বিভিন্ন স্থানে আমার নির্বাচনি প্রচারণায় বাধা প্রদান ও নেতাকর্মীদের মারধর করছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন। সবশেষ গত শনিবার সন্ধ্যায় ছাতারপাইয়া ইউনিয়নের ঠনারপাড় গ্রামে আমার কর্মী সভায় হামলা চালান মোরশেদ আলমের হেলমেট বাহিনী। তারা সভায় এলোপাতাড়ি গুলি করে ছাতারপাইয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং আমার সমর্থক আবদুর রহমানের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করেছেন।
স্বতন্ত্র এই প্রার্থী আরও অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন সময় প্রচারণা চলাকালে আমার লোকজনের ওপর হামলার ঘটনায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে একাধিকবার অবগত করেছি। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনও সমাধান পাওয়া যায়নি। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন এসব বিষয়ে কোনও মামলা নিচ্ছেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) মোহাম্মদ নাজমুল হাসান রাজিব বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত প্রার্থীদের কাছ থেকে আমরা যেসব অভিযোগ পাচ্ছি, সেগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছি। হামলা এবং কারা অস্ত্র প্রদর্শন করছে, তাদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, নোয়াখালী-২ আসন থেকে আমরা আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। কয়েকটি ঘটনায় একাধিক প্রার্থী ও সমর্থককে শোকজ করা হয়েছে। প্রার্থীদের অভিযোগগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি আমরা।