পছন্দ হলেই ওজন স্কেলে উঠছে গরু
বাংলাদেশ

পছন্দ হলেই ওজন স্কেলে উঠছে গরু

হাটের ঝক্কি ঝামেলা, দর কষাকষি ও সবশেষ গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে এবার বরিশালের ক্রেতারা খামার থেকে কোরবানির পশু সংগ্রহ করছেন। ক্রেতার পছন্দ হলেই জ্যান্ত গরু তোলা হচ্ছে মেশিনে। ওজন করে কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। কেজি মূল্যে খামার থেকে গরু ক্রয় করে খুশি ক্রেতারা। তাছাড়া খামার থেকে গরু কিনলে থাকছে না লালন-পালনের ঝামেলা। ঈদের আগের দিন খামারিদের গাড়িতেই গরু চলে যাবে ক্রেতার বাড়ি। এ কারণে খামারে গরু বিক্রির চাহিদাও বেড়েছে।

বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত বাবুগঞ্জ উপজেলার রামপট্টি গ্রামের এমইপি অ্যাগ্রো খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম চাকলাদার জানান, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা ও মেহেরপুর হরিয়ানা, শাহীওয়াল, হাশা, দেশাল ও বুট্টি জাতের গরু সংগ্রহ করেছেন কোরবানি উপলক্ষে। তার খামারে ১৮৫টি গরু রয়েছে। ১০দিন আগেই ১৫৫টি গরু কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। কোরবানির একদিন আগে সবার বাড়ির সামনে খামারের নিজস্ব পরিবহনে গরু দিয়ে আসা হবে। ক্রেতার কাছ থেকে যানবাহন খরচ নেওয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘গরু হাটে মানুষের ধাক্কাধাক্কি, গোবর কাদায় একাকার হওয়া। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে পছন্দের গুরু দর কষাকষি করে কেনাটা মানুষ বড় ঝামেলা মনে করে। তারপর রয়েছে গরু বাড়িতে নিয়ে লালন-পালনের সমস্যা। শহরে গরু রাখার মতো জায়গা খুবই কম। এসব কারণে এ বছর খামার থেকে গরু ক্রয়ে আগ্রহ বেড়েছে বরিশাল অঞ্চলের মানুষের।’

খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘খামারের গরুগুলোর লালন-পালন মানুষের মতোই করা হচ্ছে। গরুর জন্য কয়েকজন পশু চিকিৎসক রয়েছেন। কোনও সমস্যা হলেই তারা তাৎক্ষনিক এসে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।’

বরিশালের অন্যান্য খামারিরাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের পালিত পশুর বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। সেখান থেকে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ক্রেতারা যোগাযোগ করে সরাসরি খামারে চলে যাচ্ছেন। এরপর পছন্দের গরুটি স্কেলে তুলে দাম নির্ধারণ হচ্ছে।

খামারে গরু কিনতে আসা ক্রেতারা বলেন, ‘গরুর হাটে গিয়ে পছন্দের গরুটির দাম বলবে এরপর দর কষাকষি সেই ঝামেলা থেকে মুক্ত। তাছাড়া খামারে গরু ক্রয় করলে বাজেটের মধ্যে থাকা সম্ভব হয়। খামারে ৭৫ হাজার টাকা থেকে সাড়ে চার লাখ টাকার গরু রয়েছে। আর খামারের যে পরিবেশ তা হাটে কোনও দিন পাওয়া যাবে না। এ কারণে হাট থেকে খামার থেকে গরু ক্রয় করা অনেক স্বাচ্ছন্দ্য।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নুরুল আমিন বলেন, ‘এ বছর বরিশাল জেলার ১০ উপজেলায় বড় ছোট আট হাজার ১৩টি খামারে কোরবানির গরু বিক্রি হচ্ছে। বড় খামারে ২০০ ও ছোট খামারে ১০ থেকে ১২টি গরু লালন পালন করা হয়। খামারে গিয়ে ক্রেতারা গরু পছন্দ হওয়ার পর তা তুলে দেয়া হয় স্কেলে। সেখানে কেজি হিসাবে দাম নির্ধারণ হয়। এরপর টাকা পরিশোধ করে গরুর ছবি তুলে ক্রেতারা নিশ্চিতে ফিরছেন বাড়ি। দর কষাকষি নেই এবং লাল-পালনের ঝামেলা নেই এমনকি গরু খামারিদের তত্ত্বাবধানে বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। আর খামার থেকে গরু ক্রয় কিনলে হাসিল লাগে না এই সুযোগটাও ক্রেতারা নিচ্ছেন।’

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এ বছর বরিশাল জেলায় পশুর চাহিদা রয়েছে এক লাখ সাত হাজার ৪২৩টি। যার বিপরীতে পশু রয়েছে এক লাখ ৬ হাজার ১১৮টি। এরপরও কোরবানির ২ থেকে ৩ দিন আগে পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে গরু বরিশালে প্রবেশ করবে। এতে বহু গরু উদ্বৃত্ত থাকবে।’

Source link

Related posts

উত্তরবঙ্গগামী ৩৫ কিলোমিটারে গাড়ির ধীরগতি, থেমে থেমে যানজট 

News Desk

এটিএম থেকে লোপাট আড়াই কোটি টাকা

News Desk

জামাই মেলায় মানুষের ভিড়, একদিনে কোটি টাকার মাছ বিক্রি

News Desk

Leave a Comment