প্রতি বছর ঈদুল আজহার আগে ওজন ও দামে আলোচনায় আসে বাহারি নামের গরু। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে নওগাঁর দুটি গরু, মালিক যাদের নাম রেখেছেন ‘পদ্মা’ ও ‘সেতু’।
জেলার বদলগাছী উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের দরিয়াপুর গ্রামের মামুনুর রশিদ লিটন এই গরু দুটির মালিক। ঈদ উপলক্ষে বিক্রির জন্য তাদের প্রস্তুত করেছেন। দুটির মধ্যে কালচে রঙের ‘পদ্মার’ ওজন ৩৩ মণ এবং লালচে রঙের ‘সেতুর’ ওজন ৩০ মণ। গরু দুটির দাম চাওয়া হচ্ছে ২৫ লাখ টাকা। এরই মধ্যে অনেকেই কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। দূর-দূরান্ত থেকে ‘পদ্মা-সেতু’ কিনতে আসছেন ক্রেতারা। করছেন দাম-দরও।
পরিবারের শিশুরা গরু দুটিকে ‘ভূতু’ ও ‘জিঁজিঁ’ বলে ডাকতো। সম্প্রতি পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী শখ করে গরু দুটির নাম রেখেছেন ‘পদ্মা’ ও ‘সেতু’।
গরুর মালিক মামুনুর রশিদ লিটন বলেন, ‘শখের বসে প্রায় আড়াই বছর আগে জয়পুরহাটের পাঁচবিবির হাট থেকে ছয় মাস বয়সের কালো রঙের ষাঁড় ৬০ হাজার টাকা এবং লাল রঙের ষাঁড় ৬৫ হাজার টাকায় কিনি। এরপর বাড়িতে নিজ সন্তানের মতো করে ষাঁড় দুটিকে লালন-পালন শুরু করেছি। কাঁচা ঘাস, বিচি কলা, গম, ধান, ভুট্টা, মাসকালাই, খেসারি কালাই ও মশুর ডাল ভুসি দিয়ে খাওয়ানো হয়েছে। মোটাতাজাকরণের কোনও ওষুধ দিইনি। প্রতিদিন দুটি গরুর জন্য দেড় হাজার টাকা খরচ হয়। কেনার পর থেকে এখন পর্যন্ত দুই বছর চার মাসে সবমিলে খরচ হয়েছে প্রায় ৮-৯ লাখ টাকা।’
তিনি আরও বলেন, ‘পদ্মার ওজন হবে ১৩০০ কেজি আর সেতুর ১২০০ কেজি। ষাঁড় দুটির দাম চাচ্ছি ২৫ লাখ টাকা। কিন্তু এখন পর্যন্ত দাম উঠেছে ১৮ লাখ টাকা। মনের মতো দাম পেলে বাড়ি থেকেই বিক্রি করবো। আর যদি ভালো দাম না পাই, তাহলে ঢাকায় নিয়ে যাবো।’
জেলা প্রাণিসম্পদ দফতর সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে নওগাঁয় খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে চার লাখ ৩৩ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। এসব পশুর মধ্যে রয়েছে ষাঁড়, বলদ, গাভি (বাচ্চা উৎপাদনে অক্ষম) মহিষ ও ছাগল। এর মধ্যে শুধু গরুই ৬৭ হাজার। জেলায় প্রায় ২৫ হাজারের মতো খামার রয়েছে। গত বছর দুই লাখ ২৫ হাজার পশু কোরবানি হয়েছিল। এবারে জেলায় প্রায় তিন লাখের বেশি কোরবানি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জেলায় কোরবানির জন্য পশুর সংকট হবে না। চাহিদার তুলনায় জেলার খামারগুলোতে পশু বেশি থাকায় এবার অন্য কোনও জায়গা থেকে পশু আনার প্রয়োজন নেই।