গোপালগঞ্জে এপিসি কোম্পানীর খুলনা অঞ্চলের আঞ্চলিক ম্যানেজার সাইফুল ইসলামের (৫০) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে ঔষুধ কোম্পানীর ওই কর্মকর্তার লাশ গোপালগঞ্জ শহরের মোহাম্মদপাড়া এলাকার রংধনু ভিলার ২য় তলার ফ্লাটের বাথরুম থেকে উদ্ধার করেছে গোপালগঞ্জ থানা পুলিশ। পরকীয়ার জেরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করছে।
সাইফুল ইসলাম ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার দক্ষিণ গঙ্গাধরদী গ্রামের আব্দুল লতিফ মল্লিকের ছেলে। তিনি খুলনা শহরের ডিবিআর সদর দপ্তরের কবিরের বটতলা এলাকায় স্ত্রী, ৩ মেয়ে ও ১ ছেলে নিয়ে বসবাস করতেন।
নিহত ওই কর্মকর্তার স্ত্রী আরিফা বেগম বলেন, আমার স্বামী শারমিন নামে এক মহিলার সাথে সম্প্রতি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে বলে আমার স্বামী আমাকে জানান। ওই মহিলার আগে আরো ২টি বিয়ে ছিলো। এ নিয়ে আমার স্বামী প্রচন্ড চাপের মধ্যে রয়েছেন বলে আমাকে জানায়। তিনি গত বৃহস্পতিবার (২০মে) খুলনার বাসা থেকে বের হন। পরের দিন শুক্রবার সকাল ৬ টার দিকে মোবাইলে প্রথম তার সাথে আমার কথা হয়। পরে বেলা ১১ টার দিকে আমার স্বামীর সাথে ফের কথা হয়। তিনি তখন ভীষন ঝামেলার মধ্যে আছেন জানিয়ে ফোন কেটে দেন। এরপর থেকে আমার স্বামীর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আমার স্বামীর সন্ধান না পেয়ে আমি ২২ মে শনিবার খুলনার সোনাডাঙ্গা থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করি।
শহরের মোহাম্মদ পাড়ার শহীদ চুন্নু সড়কে রংধনু ভিলার মালিক মোঃ সাহিদুল ইসলাম শেখ বলেন, অজ্ঞাত ওই মহিলা তার স্বামী পরিচয়ে সাইফুলকে নিয়ে ৩ মে আমার বাড়িতে আসেন। ওই মহিলা জানায় তার স্বামী খুলনা থেকে গোপালগঞ্জে বদলী হয়েছেন। এ কারণে তাদের বাসা দরকার। তারা মাসিক ৫ হাজার টাকার ভাড়ায় ঘর ঠিক করেন। ঘরে তারা কিছু মালামাল রেখে ঈদের পর আসবেন জানিয়ে ওই দিন চলে যান । ঈদের পর ২০ মে দুপুরে ওই মহিলা ও সাইফুল ইসলাম এসে বাড়িতে ওঠেন। এ সময় আমি আইডিকার্ড ও অগ্রীম ভাড়া চাই। তারা এ গুলো পরে দেবে জানিয়ে ঘরে ওঠেন। ওই মহিলার মুখে মাস্ক ও পরনে বোরকা ছিলো। এ কারণে তার চেহারা বোঝা যাচ্ছিলো না। ওই দিন ওই মহিলা রাতে রান্নাবান্না করেন। পরের দিন শুক্রবার জুম্মার নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরে ওই ফ্লাটে তালা দেয়া দেখতে পাই।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, সাইফুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের গলা কাটা রয়েছে। ৩ দিন আগে সাইফুলকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা করছি। লাশে চন ধরেছেপ। ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন রকমের যৌন উত্তেজক সিরাপ ও ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারনা করা হচ্ছে পরকীয়ার জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে। ওই মহিলা এ ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে। তাকে আমরা গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছি। ওই মহিলাকে গ্রেফতার করতে পারলেই এ ঘটনার রহস্য উন্মোচিত হবে। এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে
সূত্র : আজকের গোপালগঞ্জ