বর্ষায় সুবলং ঝরনার সৌন্দর্যের যেন সীমা থাকে না। প্রাকৃতিক এই ঝরনায় গরমে গা ভিজিয়ে একটু স্বস্তি নিতে ও অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন পর্যটকরা। নানা কারণে বছরের বেশিরভাগ সময়ে পানি থাকে না। তবে বর্ষা মৌসুমেই যৌবন ফিরে যায় ঝরনাটি।
রাঙামাটি সদর থেকে সুবলংয়ের দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। ভরা বর্ষা মৌসুমে মূল ঝরনার জলধারা প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু থেকে নিচে আছড়ে পড়ে। আর অপূর্ব সুরের মূর্ছনায় পর্যটকরা মুগ্ধ হন। রাঙামাটির রিজার্ভ বাজার, পর্যটন ঘাট ও বিভিন্ন স্থান থেকে স্পিডবোট ও নৌযানে করে সহজেই সুবলং যাওয়া যায়।
ইতোমধ্যে অধিকাংশ হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউজ আগাম বুকিং শুরু হয়েছে। এবারে ঈদের ছুটিতে আশানুরূপ দর্শনার্থীর আগমন ঘটবে বলে আশা ব্যবসায়ীদের। পর্যটকদের সব ধরনের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
সুবলং ঝরনায় ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা সোহান ও নাজিফা বলেন, ‘রাঙামাটি পৃথিবীর সুন্দর জায়গাগুলোর একটি। সুবলং ঝরনায় আসার পথটি দারুণ। দুই পাশে বিশাল পাহাড়ের পাশ দিয়ে বোট দিয়ে ছুটে চলা, তারপর ঝরনায় গা ভেজানো, সবকিছু অসাধারণ।’
স্থানীয় পর্যটক নমিতা চাকমা বলেন, ‘এখন বর্ষা মৌসুমে ঝরনায় প্রচুর পানি আছে। কলেজের বন্ধুরা একসঙ্গে সুবলং ঝরনায় ভিজতে এসেছি। আমি এর আগেও অনেকবার এসেছি। বন্ধুদের সঙ্গে প্রথমবার আসা হলো।’
সুবলং ঝরনাকে কেন্দ্র করে আসে পাশে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু দোকান। এতে স্থানীয়রা অর্থনৈতিকভাবে লাভবানও হচ্ছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মন্টু চাকমা ও বিকাশ ধন চাকমা জানান, ছুটির দিনে প্রচুর পর্যটক আসে। তখন বেচাকেনা ভালো হয়। ঈদের ছুটিতে লোকজন এলে বেচাকেনা আরও ভালো হবে। তবে ঝরনায় পানি না থাকলে পর্যটকরা আসতে চান না।
বরকল সুবলং ঝরনার ইজারাদার জয় চাকমা বলেন, ‘বর্ষা হলেই ঝরনায় পানি বেড়ে যায়। তখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে।’
ট্যুরিস্ট পুলিশ রাঙামাটি জোনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল আনোয়ার বলেন, ‘আমরা সবসময় পর্যটকদের নিরাপত্তা দিয়ে থাকি। টহল টিমের সঙ্গে সাদা পোশাকেও বিশেষ টিম কাজ করে। ছুটির দিন ও ঈদের ছুটির সময় বাড়তি পর্যটক আসে। তাদের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে বেড়াতে আসা লোকজন রুম বুকিং করেছেন। পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুতি সেরে নিয়েছি। বর্ষায় রাঙামাটির রূপ প্রকৃতি খুব সুন্দর লাগে।’