দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া এবং রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌপথ। তবে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকেই বদলে গেছে দৃশ্যপট। ব্যস্ততম পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটে এখন নেই কোনও যানজট। ভোগান্তি ছাড়াই ঈদুল ফিতরের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঘরমুখী মানুষ পাটুরিয়া ঘাট থেকে ফেরি ও লঞ্চে নদী পার হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে আসছে।
সোমবার (৮ এপ্রিল) দৌলতদিয়া ঘাটে সরেজমিন দেখা যায়, ফেরিঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কম থাকলেও লঞ্চঘাটে রয়েছে চাপ। যা গতকালের থেকে কিছুটা বেশি। এদিকে ঘাট এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে পুলিশ। এ ছাড়া সাদা পোশাকেও পুলিশ মাঠে রয়েছে।
ঘাট সংশ্লিষ্টরা জানান, এবারের ঈদযাত্রায় যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে ১৭টি ফেরি এবং ২০টি লঞ্চ চলাচল করছে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে। সেই সঙ্গে ঘাটকে যানজটমুক্ত রাখতে ঈদের আগে ও পরে মোট সাত দিন পশুবাহী এবং জরুরি পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ব্যতীত সাধারণ ট্রাক পারাপার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যাত্রাপথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, ভোগান্তি ও যানজট নিরসনে ঘাট এলাকায় সার্বক্ষণিক কঠোর নজরদারি করছে প্রশাসন।
উত্তরা থেকে আসা ঝিনাইদহগামী যাত্রী আবদুর রহমান বলেন, ‘লোকাল বাসে কোনও ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত এসে লঞ্চে নদী পার হয়েছি। ভেবেছিলাম ঘাটে অনেক যানজট থাকবে। কিন্তু ঘাটে এসে অপেক্ষা করতে হয়নি। সরাসরি লঞ্চে নদী পার হয়ে চলে এসেছি। এখন ঘাট থেকে বাসে ঝিনাইদহ যাবো।’
মিরপুর থেকে পরিবার নিয়ে মেহেরপুর ঈদ করতে যাচ্ছেন জাকির সরদার। তিনি বলেন, ‘ঈদযাত্রা এত স্বস্তির হবে কখনও ভাবিনি। কোনও ভোগান্তি ছাড়াই দৌলতদিয়া পর্যন্ত এসেছি। তবে যানবাহনগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দরকার।’
দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘ঈদে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নদীতে নৌ-পুলিশের টহল রয়েছে। আমরা ঈদে ঘরমুখী মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ঘাটে সব সময় টহলে রয়েছি।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৭টি ফেরি যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে চলাচল করছে। ঈদে মানুষ যাতে ভোগান্তি ছাড়াই বাড়ি পৌঁছাতে পারে সে ব্যাপারে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি।’ তিনি জানান, বর্তমানে তিনটি ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের যাত্রা নির্বিগ্ন করতে আমরা সব রকম প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। ঘাটে এসে যাত্রীরা যেন কোনও হয়রানির শিকার না হন সেজন্য আমরা সব সময় নজরদারি করছি। এ ছাড়াও যাত্রীদের নিরাপত্তায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রস্তুত রয়েছে। আশা করছি, এবারের ঈদযাত্রা সবার জন্য আনন্দময় হবে।’