রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে যাত্রী পারাপার কমে গেছে। লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও তুলনামূলক যাত্রী কম। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর অল্প কয়েকজন যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে।
বুধবার (৩ আগস্ট) সরেজমিন দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে দেখা যায়, পন্টুনের সাথে লঞ্চগুলো বেঁধে রাখা হয়েছে। লঞ্চ পারাপারে যাত্রী কম আসায় ঘাটে তেমন চাপ নেই। অধিকাংশ চলমান লঞ্চ ঘাটে এক ঘণ্টার বেশি অপেক্ষা করে ৩০-৪০ জন যাত্রী নিয়ে দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে ২০-৩০ মিনিট পরপর শতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছেড়ে যেতো। এখন যাত্রীর সংখ্যা নেমে এসেছে অর্ধেকের নিচে। পাটুরিয়া ঘাট থেকে আসা লঞ্চগুলোতেও তেমন যাত্রী পার হচ্ছে না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) দৌলতদিয়া ঘাট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ার আগেও যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ছিল। সেতু চালুর পর থেকে ঘাট এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়ি, পণ্যবাহী ট্রাক, যাত্রীবাহী পরিবহনসহ হালকা যানবাহনের চাপ কমে গেছে। সেই সঙ্গে নদী পার হতে আসা যাত্রীদের চাপ নেই বললেই চলে। কিন্তু সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।
ফরিদপুরের মধুখালী থেকে লঞ্চঘাটে আসা টঙ্গীগামী যাত্রী কাউছার মাহমুদ বলেন, ‘মহাসড়ক ও ঘাট অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গেছে। আমি মধুখালী থেকে লোকাল বাসে ৫০ মিনিটের মধ্যে ঘাটে চলে এসেছি। ঘাট থেকে লঞ্চে নদী পার হয়ে তারপর যাবো। লঞ্চে ৩০ মিনিট ধরে বসে আছি, এখনও যাত্রী কম বলে ছাড়ছে না।’
এমভি টুম্পার চালক ঠান্ডু মিয়া বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর ঘাটে এত যাত্রী কমে যাবে ভাবতেও পারিনি। ঘাটে এরকম হাহাকার আগে কখনও দেখতে হয়নি। আমরা বর্তমানে অধিকাংশ সময়ে দৌলতদিয়া থেকে ৫০-৬০ জনের মতো যাত্রী নিয়ে পাটুরিয়া ঘাটে ছেড়ে যাচ্ছি। যাত্রী কম হওয়াতে খরচ বেড়ে গেছে। মালিকপক্ষ লোকসানের মুখে রয়েছে।’
দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের ম্যানেজার নুরুল আলম মিলন বলেন, ‘যাত্রীশূন্য হয়ে গেছে লঞ্চঘাট। ঘাটে দূরপাল্লার পরিবহনসহ লোকাল যাত্রী না আসায় প্রতিটি লঞ্চ ৪০-৫০ জন যাত্রী নিয়ে ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী লঞ্চগুলো চলাচল করছে।’
বিআইডব্লিউটিএ’র দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আফতাব হোসেন জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বর্তমানে ১৭টি লঞ্চ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে চলাচল করছে। তবে তুলনামূলক যাত্রী অনেক কম। আমরা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী লঞ্চ চলাচলে সহযোগিতা করা হচ্ছে।