পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়ি তরুণীদের চীনে পাচারের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত তিন জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) বিকালে রাঙামাটির চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাউসার পারভীন তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তারা হলেন সজীব চাকমা, মামিয়া চাকমা ও জেসি চাকমা। তাদের বিরুদ্ধে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান থেকে পাহাড়ি তরুণীদের বিভিন্ন প্রলোভনে চীনে পাচারের অভিযোগে মানবপাচার দমন আইনে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে সজীব ও জেসি চাকমা ভাইবোন। তাদের বাড়ি রাঙামাটির বরকল উপজেলার ঠেগামুখে। আর মামিয়া চাকমার বাড়ি খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়ায়।
পুলিশ জানায়, চীনে পাচারের জন্য গত ১৯ জুন রাঙামাটি শহর থেকে এক কলেজছাত্রীকে অপহরণ করা হয়। ২৬ জুন ঢাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ছাত্রী ২৭ জুন বাঘাইছড়ি থানায় মানবপাচার দমন আইনে মামলা করেন। মামলার পরই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পাচারে জড়িতদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে বুধবার রাতে ঢাকার উত্তরার একটি বাসা থেকে মামলার প্রধান আসামি সজীব চাকমা, মামিয়া চাকমা ও জেসি চাকমাকে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সহায়তায় গ্রেফতার করে বাঘাইছড়ি থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের রাঙামাটি আদালতে তোলা হলে কারাগারে পাঠান বিচারক।
রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘পাহাড়ি তরুণীদের চীনে পাচারে জড়িত ঢাকা থেকে গ্রেফতার তিন আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
অভিযোগ রয়েছে, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা থেকে পাহাড়ি তরুণীদের বিয়েসহ নানা আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে চীনে পাচার করে আসছে একটি সংঘবদ্ধ। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত তিন জনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাঙামাটিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করে পাহাড়ের সাধারণ মানুষ।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পাড়ার কার্বারি হিরলাল চাকমা, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা বিজয় চাকমা, উন্নয়নকর্মী সুভাশীষ চাকমা, কবি কিকো দেওয়ান ও কলেজছাত্র উচিমং মারমা। মানববন্ধনে তারা বলেন, গত ১৯ জুন শহর থেকে পাচারের জন্য এক কলেজছাত্রীকে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেফতার আসামিদের শাস্তির দাবি জানাই। সেইসঙ্গে পাচারে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইশতিয়াক আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পাচারের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। যারাই জড়িত থাকুক, গ্রেফতার করা হবে।’