বান্দরবানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী মারমাদের অন্যতম সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব সাংগ্রাই শুরু হয়েছে। বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে বুধবার (১৩ এপ্রিল) সকালে তিন দিনব্যাপী এই উৎসবের সূচনা করা হয়।
হিংসা-বিদ্বেষ দূরে থাক শান্ত সবুজ গিরি ছায়ায়, সকল কালিমা মুছে যাক মৈত্রীময় জলধারায়—স্লোগানে পুরাতন বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে বরণ করতে সাংগ্রাই শুরু হয়েছে।
সকালে বান্দরবান রাজার মাঠ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রাটি বের হয়ে, শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় রাজার মাঠে এসে শেষ হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের আয়োজনে এ শোভাযাত্রায় বিভিন্ন ব্যানারে পার্বত্য জেলা পরিষদ ও উৎসব উদযাপন পরিষদ, ম্রো নৃ-গোষ্ঠী, খুমি নৃ-গোষ্ঠী, ত্রিপুরা নৃ-গোষ্ঠী, মারমা নৃ-গোষ্ঠী, তঞ্চঙ্গ্যা নৃ-গোষ্ঠী, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল, কাইন্তা লাপাই যুব কল্যাণ সমিতিসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নৃ-গোষ্ঠীরা অংশ নেয়।
মারমা তরুণীরা জানান, এই দিনে মূলত নতুন বছরকে বরণ করি। আগামী বছরের চিন্তা ধারায় সাংগ্রাই পালন করে থাকি। এদিনে আমরা খুব আনন্দ উপভোগ করি। ছেলেমেয়ে সবাই পাড়া-মহল্লায় নাচেগানে, আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে। সাংগ্রাইয়ের একটামাত্র দিনের জন্য সবাই বসে থাকে, যেটা পাহাড়ি বাঙালি মিলে একসঙ্গে উপভোগ করা হয়।
এবার ১৩ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাংগ্রাই উৎসব পালন করা হবে। এ উপলক্ষে আজ সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে এর সূচনা করা হয়। ১৪ তারিখ বুদ্ধমূর্তি স্নানের মাধ্যমে ধর্মীয় কাজ শেষে ১৫ এপ্রিল মৈত্রী পানি বর্ষণ এবং নানা খেলাধুলার মাধ্যমে এই উৎসবের শেষ হবে।
এদিকে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে বৈসাবি উৎসবের রঙ ছড়িয়ে পড়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কাছে এই উৎসব ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। চাকমারা বিজু, ত্রিপুরারা বৈসুক, মারমারা সাংগ্রাই, তঞ্চঙ্গ্যারা বিষু, ম্রো ও খুমিরা চাংক্রান, অহমিয়ারা বিহু ও চাক নামে উৎসবটি উদযাপন করে থাকে। এই উৎসব বৈসাবি নামেও পরিচিত।