Image default
বাংলাদেশ

পাহাড়ে সেচ সংকট, কমেছে বোরো চাষ

পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়িতে সেচ ব্যবস্থার সংকটে বোরো ধান আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। অন্যান্য মৌসুমের তুলনায় এবার বোরো আবাদ কমেছে। অনাবাদি পড়ে আছে অনেক জমি। বৃষ্টির পানিসহ বিভিন্ন উৎস সংরক্ষণ করা গেলে জেলায় বোরো মৌসুমে আরও বেশি জমি চাষ করা যেতো।

কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, জেলায় সমতল ও পাহাড়ি ঢালু এলাকায় চাষ যোগ্য আবাদি জমি রয়েছে ৬২ হাজার ৬৭২ হেক্টর। গত আমন মৌসুমে ২৮ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। এবার বোরো মৌসুমে ১১ হাজার ৪শ’ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হচ্ছে। সেচ সংকট, ডিজেলসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে কমেছে বোরো চাষের পরিমাণ। ধানের বিকল্প হিসেবে রবি শস্যসহ শীতকালীন শাক-সবজি চাষ করা হলেও অধিকাংশ জমি অনাবাদি থেকে যাচ্ছে।

খাগড়াছড়ি সদরের আপার পেরাছড়া এলাকার কৃষক মোসাথোয়াই মারমা বলেন, তাদের এলাকার বেশিরভাগ জমি বোরো চাষের আওতায় আসেনি। শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় অনাবাদি থাকে এসব জমি। বোরো মৌসুমে পতিত জমিগুলো চাষাবাদের আওতায় আনতে তিনি গভীর নলকূপ বসানোর দাবি জানান।

কমলছড়ি এলাকার কৃষক কৃর্তীময় চাকমা বলেন, দুর্গম, উঁচু-নিচু ও পানি সংকটের কারণে বেশিরভাগ জায়গা খালি পড়ে আছে। পানি সংকটে কৃষকরা চাষাবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। নদীতে যেটুকু পানি আছে তা পাম্পের মাধ্যমে তুলতে গেলে এখন অনেক খরচ পড়ে যায়। এত খরচ দিয়ে ধান চাষ করে লাভ করা যায় না। তাই বেশিরভাগ জমি পতিত পড়ে আছে।

দিঘীনালা উপজেলার বেতছড়ি এলাকার কৃষক আবুল হাশেম বলেন, জমিতে নদী থেকে পানি নেওয়ার কোনও সেচ নালা না থাকায় বোরো চাষ কমছে। নদীর পাশের সব জমিতেই এবার তামাক চাষ হয়েছে। বোরোর চেয়ে তামাক চাষে বেশি লাভ। এ কারণে কেউ বোরো ধান চাষ করছে না। বোরো ধান চাষ করার বিষয়ে কৃষি বিভাগ বা সরকার কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন এই কৃষক।

পানি সংকট সমাধান করা সম্ভব হলে বোরো আবাদ বাড়তো

দিঘীনালা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, পুরো জেলায় বোরো ধানা চাষের পরিসংখ্যান হতাশাজনক। পানি সংকট সমাধান করা সম্ভব হলে বোরো আবাদ বাড়তো। উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে কৃষি বিভাগ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মো. সফি উদ্দিন বলেন, পাহাড়ে অনেক সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যা তার দফতর এককভাবে সমাধান করতে পারে না। পানি সংকট দূর করা না গেলে বোরো চাষের পরিধি বাড়বে না। কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের মাধ্যমে পাহাড়ে সেচ প্রকল্পের কার্যক্রম বাড়ানোর পাশাপাশি প্রাকৃতিক পানির উৎস সংরক্ষণে জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

Source link

Related posts

সুনামগঞ্জের ৫ উপজেলা প্লাবিত

News Desk

জীবিকার প্রাধান্যে খুলছে সবকিছু

News Desk

ঈদের আগে দূরপাল্লার গণপরিবহন চালুর দাবি মালিক-শ্রমিকদের

News Desk

Leave a Comment