চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গ্রামের নিখোঁজ কিশোর আবু হুরায়রার (১৪) লাশ পাওয়া গেছে। রবিবার দিনগত রাতে ওই গ্রামের কবরস্থান থেকে তার অর্ধগলিত হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। সোমবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ জানায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়। প্রতিবেশী রাজমিস্ত্রি আব্দুল মোমিনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
আবু হুরাইরা চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গ্রামের ভুট্টা ব্যবসায়ী ও কৃষক আব্দুল বারেকের একমাত্র ছেলে। সে চুয়াডাঙ্গা ভি জে সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।
পুলিশ জানায়, দুই বছর আগে গ্রামে উচ্চস্বরে গান বাজাতে নিষেধ করেন আবু হুরায়রার বাবা আব্দুল বারেক। সে সময় একটি সাউন্ড সিস্টেম ভেঙে গেলে ক্ষুব্ধ হন মোমিন। এরই জেরে টার্গেট করা হয় আবু হুরায়রাকে। গত ১৯ জানুয়ারি তাকে একা পেয়ে খরগোশ ছানা দেওয়ার কথা বলে কবরস্থানের মধ্যে নিয়ে যায় মোমিন। সেখানেই গলাটিপে হত্যা করা হয় আবু হুরায়রাকে। এরপর লাশ গুম করতে একটি পুরনো কবরে মাটিচাপা দেওয়া হয়।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘হত্যাকারীরা ওই কিশোরকে হত্যার ১৭ দিনের মাথায় ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে একটি চিরকূট পাঠায়। এরপর তার বাবার মোবাইল ফোনে কল করেও চাওয়া হয় চাঁদা। নিখোঁজের পর ওই গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে নির্মাণশ্রমিক মোমিনকে আটক করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তিতে কবরস্থানের ভেতর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।’
এদিকে আবু হুরায়রাকে হারিয়ে পাগলপ্রায় স্বজনরা। শোকে স্তব্ধ গোটা এলাকা। যাতে আর কেউ এমন অপরাধ করতে না পারে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন এলাকাবাসী।
গত ১৯ জানুয়ারি প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয় আবু হুরায়রা। এরপর ২৬ জানুয়ারি প্রাইভেট শিক্ষকসহ পাঁচ জনকে আসামি করে অপহরণ মামলা করেন তার বাবা। মামলায় প্রাইভেট শিক্ষক রনজু ও তার ভাই মনজু কারাগারে রয়েছে। সোমবার হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত তালতলা গ্রামের মোমিনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।