শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটিতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে সুন্দরবন। টানা চার দিনের ছুটির শেষ দিনে সবচেয়ে বেশি পর্যটকের আগমন ঘটেছে সুন্দরবনে। কেউ এসেছেন পরিবারের সঙ্গে আবার কেউ এসেছেন বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে।
যদিও এখন পর্যটন মৌসুম নয়, কিন্তু পূজার ছুটিতে অনেক পর্যটকের সমাগম হয়েছে সুন্দরবন। মূলত শীতকালে শুরু হয় পর্যটন মৌসুম। বাকি সময়টাতে স্বল্পসংখ্যক পর্যটকের দেখা মেলে সুন্দরবনে। আর বছরের বিভিন্ন ছুটির দিনেও বাড়ে পর্যটক। পূজার ছুটি কাটাতে অনেকে বেছে নিয়েছেন সুন্দরবন ভ্রমণকে। তারা বনের হিংস্র প্রাণীর ভয়কে জয় করে মেতে উঠছেন নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগে। বনের গাছপালা ও প্রাণী দেখে বিমোহিত দর্শনার্থীরা।
করমজল পর্যটনকেন্দ্রে এসেছেন সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা শিক্ষিকা জাহানারা আফরোজ। তিনি বলেন, ‘খোলা বনে বন্যপ্রাণীর আক্রমণের ভয় তো লাগছেই। বানর, হরিণ, কুমিরসহ অনেক প্রাণী দেখেছি, খুব ভালো লেগেছে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা ব্যবসায়ী আতাউর রহমান বলেন, ‘এবার নিয়ে সুন্দরবনে দুবার আসা হলো। প্রকৃতির টানে ছুটে এসেছি। প্রাণ-প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে খুব ভালো লাগছে।’
কুমিল্লা থেকে আসা স্কুল শিক্ষার্থী জান্নাত বৃষ্টি আক্ষেপ করে বলেন, ‘বাঘ দেখতে পারিনি, দেখতে পারলে ভালো লাগতো। বাঘ ছাড়া অন্যান্য পশুপাখি দেখছি।’
এদিকে, সুন্দরবন ভ্রমণে এসে আনন্দ উপভোগের পাশাপাশি নানান সমস্যার দিকগুলোও তুলে ধরছেন পর্যটকরা।
চাঁদপুর থেকে আসা জান্নাতুল ফেরদৌস ও আমিনুল দম্পতি বলেন, ‘সুন্দরবনের স্পটগুলোতে বিদ্যুৎ নেই, তাই গরমে কষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া খাবার পানিরও কোনও ব্যবস্থা নেই, নেই হাত-মুখ ধোয়ার পানির ব্যবস্থাও। তাই আনন্দ অনেকটা নিরানন্দে পরিণত হয়েছে।’ গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর থেকে আসা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এখানকার ব্যবস্থাপনা মোটামুটি, তবে আরো ভালো হতে পারতো।’
করমজল পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, ‘দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটায় সুন্দরবনের পর্যটকদের আগমন বাড়তে শুরু করেছে। আর পূজার ছুটিতে পর্যটকের আগমন আরও বেশি। আমরা আগত পর্যটকদের সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছি। যারা একবার আসবেন, তারা বারবারই আসতে চাইবেন এখানে।’