প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননা করে বক্তব্য দেওয়ার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বারদী ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বাবুলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুর রহমানের আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। বিচারক আবেদন গ্রহণ করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী হলেন- বারদী ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দী পাইকপাড়া এলাকার আবুল হাশেমের ছেলে। তিনি বলেন, ‘বারদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বাবুল প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে একটি মাহফিলে বেফাঁস বক্তব্য দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের হৃদয়ের স্পন্দন। আমি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী ও সমর্থক। তাই প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে করা বেফাঁস বক্তব্য মেনে নিতে পারিনি। তাই মানহানির মামলা করেছি। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে ডিবি পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেফাঁস বক্তব্যের ঘটনায় আমি ভেবেছি, আওয়ামী লীগের পদধারী নেতারা তার বিরুদ্ধে মামলা করবে। কিন্তু তেমনটি হয়নি। এ কারণে আমি বাধ্য হয়ে মামলা করেছি। যার ফলে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বেফাঁস বক্তব্য দেওয়ার ফলে চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বাবুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে ডিবি পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’
এর আগে, ১২ ফেব্রুয়ারি সোনারগাঁও উপজেলার বারদী ইউনিয়নের পাইকপাড়া দেওয়ান বাড়ির বাৎসরিক মাহফিলে চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহবুবুর রহমান বাবুল প্রধানমন্ত্রীকে অবমাননা করে বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমাকে কেউ টাকা দিয়ে কিনতে পারবে না। আমার এলাকায় আমি ম্যাজিস্ট্রেট। আমি যা বলবো তাই হবে। আমি যদি সুইচ অফ বলি তাহলে সেটাই হবে। প্রশাসন আমার পক্ষে কাজ করবে। কারও ফোনে প্রশাসন আসবে না। ১৯৭৪ সালের পর বারদীতে কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হয়নি। এটা আপনাদের গর্ব, আপনাদেরকেই ধরে রাখতে হবে। আগের দিন ভুলে যেতে হবে। আমি শুধু চেয়ারম্যান না, আমি আপনাদের বাবুল। শান্তির বাজারে শান্তি থাকবে। বাইরে থেকে কেউ এসে ঝামেলা করলে হাত পা ভেঙে ফোন দেবেন। আমি উদ্ধার করবো। হাত পা না ভেঙে আমাকে ফোন দেবেন না। হাতে চুড়ি পরে বসে থাকবেন না। আমি আমার যোগ্যতায় চেয়ারম্যান হয়ে এসেছি। তাই কাউকে পরোয়া করি না।’
এই বক্তব্যের জেরে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয় জেলা আওয়ামী লীগ। পরের দিন চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বাবুল সংবাদ সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রী, দেশ, জাতি ও দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে ক্ষমা চান।
উল্লেখ্য, ইউপি নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ছিলেন। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তিনি বিনা ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।