টাঙ্গাইলে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে সিল মারা ব্যালটের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন অনেকে। বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে পছন্দের প্রার্থীদের খুশি করতে সিল মারা ব্যালটের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করার কথা স্বীকার করেছেন কেউ কেউ। তবে ছবিগুলো ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র-প্রতিক্রিয়া শুরু হয়।
বুধবার (২৯ মে) তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সদর ও দেলদুয়ার উপজেলায় ভোট দেওয়ার পর সিল মারা ব্যালটের ছবি অনেকের ফেসবুকে দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে ভোটাররা সমালোচনা করেছেন।
সিল মারা ব্যালটের ছবি পোস্ট করা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার সকালে গোপন বুথে ঢুকে তারা পছন্দের প্রার্থীদের প্রতীকে ভোট দেন। পরে নিজেদের মোবাইল দিয়ে সিল মারা ব্যালটের ছবি তোলেন। প্রার্থীকে খুশি করতে ওই ছবি নিজেদের ফেসবুকে পোস্ট করেন।
অন্তত ১০ জনের ফেসবুক পোস্টে দেখা গেছে, দেলদুয়ার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এম শিবলী সাদিকের টেলিফোন প্রতীকে সিল মেরে ব্যালটের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন আলমগীর হোসেন নামের একজন। একই উপজেলায় এ্যালেক্স অপ্পি নামের আরেকজন টেলিফোন প্রতীকে সিল মেরে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। একই প্রতীকে সিল মারা ব্যালট পোস্ট করেছেন আরও কয়েকজন।
পাশাপাশি সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন খানের দোয়াত-কলম প্রতীকে, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ইশতিয়াক আহম্মেদ রাজীবের উড়োজাহাজ প্রতীকে ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী পপি গুহের পদ্মফুল প্রতীকে সিল মারা ব্যালটের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন মুহিত ইসলাম নামে একজন।
একই উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ ফারুক হোসেন মানিকের ঘোড়া প্রতীকে সিল মারা ব্যালটের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন কাজী ইলিয়াস নামের এক ভোটার। ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী কৌশিক আহম্মেদ রাজু তার পছন্দের প্রার্থী ইশতিয়াক আহম্মেদ রাজীবের উড়োজাহাজ প্রতীকে সিল মারা ব্যালটের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পোস্ট করার বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি।
সদরে আসলাম খান জনি নামে এক ব্যক্তি ঘোড়া প্রতীকে ভোট দিয়ে সিল মারা ব্যালটের ছবি পোস্ট করেছেন। শুধু তারাই নন, এভাবে আরও কয়েকজন প্রার্থীর কর্মী-সমর্থক পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে সিলযুক্ত ব্যালটের ছবি পোস্ট করেছেন। তাদের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে অনেকে প্রতিবাদ ও সমালোচনা করেছেন। তবে কোন কোন কেন্দ্র থেকে এসব ব্যালটের ছবি তোলা হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সদর উপজেলার কৃষ্ণ কুমার উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মনোতোষ ঘোষ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সিল মারা ব্যালটের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করা অপরাধ। কেউ পোস্ট করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তবে আমার কেন্দ্রে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।’
এ প্রসঙ্গে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মতিয়ুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সিল মারা ব্যালটের ছবি কেউ ফেসবুকে দিয়েছে কিনা, তা জানি না। নিশ্চিত না হয়ে এ বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’