ফরিদপুরে ডায়রিয়ার প্রকোপ, বারান্দা-গাছতলায় চলছে চিকিৎসা
বাংলাদেশ

ফরিদপুরে ডায়রিয়ার প্রকোপ, বারান্দা-গাছতলায় চলছে চিকিৎসা

ফরিদপুরে গত কয়েক দিন ধরে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১১৯ রোগী। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। শয্যা না পেয়ে অনেকে বারান্দা ও গাছতলায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

গতকাল শুক্রবার দুপুরে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ড ছাড়াও আশপাশের সকল ওয়ার্ডে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছে। কোথাও বেড না পেয়ে অনেকেই বারান্দায় ও গাছতলায় চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।

ফরিদপুর জেলা সির্ভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান জানান, ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি না নেওয়ায় এখানে চাপ বেড়েছে। হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বেড সংখ্যা মাত্র ১০টি। ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১১৯ জন। তাদের মধ্যে ২৯ জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বর্তমানে ভর্তি আছে ৯০ জন। এই বিপুল সংখ্যক রোগী সেবা দিতে নার্স ও চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, সীমিত জনবল দিয়ে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। ডায়রিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় রোগীর ওষুধ সরবরাহের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. গনেষ আগারাওলা জানান, শুক্রবার বিকাল থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ১১৯ জন। গত এক সপ্তাহে এ রোগের ভর্তি রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে ৪৩২ জনের। তবে ভর্তি রোগী বেশি দিন থাকছে না, ভালো হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

এদিকে রোগীর স্বজনরা বলছেন, একদিকে চিকিৎসা সেবা পেতে কষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে দালালদের উৎপাত। ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বের হলেই পেছনে লাগে তারা।

কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে চাপ বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আলফাডাঙ্গা উপজেলার আব্দুল্লাহ আবু খান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত ২টায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলাম, সেখান থেকে সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এখন (শুক্রবার) দুপুর সাড়ে ১২টা বাজে কাঁঠাল গাছের নিচে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। আমার মতো আরও অনেকেই এভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সরকারি হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।’

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্তব্যরত সিনিয়র নার্স গোলাপী বেগম বলেন, ‘আমরা এখন সাপ্তাহিক ছুটি না নিয়েও দিন-রাত রোগীর সেবা করে যাচ্ছি। রোগী আসছে প্রচুর, জায়গা দিতে পারছি না। নিরুপায় হয়ে অনেকেই ফ্লোর, বারান্দা, আবার অনেকেই গাছতলায় সেবা নিচ্ছেন।’

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক তানজিলুর ইসলাম বলেন, ‘রোগী আসছে অনেক, তবে সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তাদের দুই থেকে তিন দিন ঠিকমতো যত্নে রাখতে ভাল হয়ে যায়।’

Source link

Related posts

কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাবার কোম্পানির লোকজন, ত্রাণ নেননি লামার পাড়াবাসী 

News Desk

জাহাজে ওঠার পর কোরআনের সুরা শুনিয়ে দস্যুদের নিবৃত করা হয়

News Desk

তৃতীয়বার এমপি হলে যা যা করবেন নিজাম উদ্দিন হাজারী

News Desk

Leave a Comment