সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর শহরে সৌদি আরব প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যা মামলায় প্রধান আসামি জিতেশ চন্দ্র গোপকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি দল ঢাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
জিতেশ চন্দ্র কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার সইলা গ্রামের যাদব গোপের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সুনামগঞ্জ পৌর শহরে ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) অভি মেডিক্যাল ফার্মেসি থেকে শাহনাজ পারভীনের (৩৪) খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের নারিকেলতলা গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী ছরুক মিয়ার স্ত্রী। এ ঘটনায় নিহতের ভাই জিতেশকে আসামি করে জগন্নাথপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
নিহতের স্বজন ও পুলিশ জানায়, পৌর শহরের নিজ বাসায় তিন সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন শাহনাজ। তিনি অভি মেডিক্যাল ফার্মেসিতে ওষুধ কেনার জন্য যাতায়াত করতেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে ফার্মেসিতে যাওয়ার উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন। এরপর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
আরও পড়ুন: ফার্মেসিতে নারীর ৬ টুকরা লাশ
এদিকে, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বোনের খোঁজে ওই ফার্মেসিতে যান শাহনাজের ছোট ভাই হেলাল মিয়া। এ সময় তিনি ফার্মেসি বন্ধ পান। পরে ফার্মেসির মালিক জিতেশকে ফোন করলে তিনি জানান, ‘শাহনাজ ওষুধ না পেয়ে চলে গেছেন’।
শাহনাজের মোবাইল ফোনে কল করা হলে অন্য এক নারী রিসিভ করে জানান, তিনি (নিহত নারী) সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আছেন। সেখানে যোগাযোগ করেও তার সন্ধান মেলেনি। পরে আবার ফোন করলে একই নারী জানান, শহরের আর্ট স্কুল এলাকায় আছেন। একেকবার একেক কথা বলতে থাকেন ওই নারী। পরে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে শাহনাজের ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
শাহনাজের খোঁজে জগন্নাথপুর থানার পুলিশ তালাবদ্ধ অভি ফার্মেসিতে অভিযান চালায়। এ সময় দোকানের রোগী দেখার টেবিলের নিচে চাদরে মোড়ানো ছয় টুকরা মরদেহ পায় পুলিশ। ঘটনার পর থেকে ফার্মেসির মালিক জিতেশ পলাতক ছিল।
হেলাল মিয়া বলেন, গত বুধবার শাহনাজ ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেন। তবে কত টাকা তুলেছেন তিনি তা জানেন না। বোনজামাই দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে থাকেন। বোনের পরিবারের সঙ্গে শহরে বসবাস করেন হেলাল।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, পুলিশ ওই ফার্মেসির সিলিং থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করেছে। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।