বইন্যার সময় মোগো আশ্রয় নেওয়ার জায়গা হইলো। ঝড়-বইন্যা হইলে অ্যাহন মোরা এই কিল্লার উপরেই গরু-বাছুর লইয়া আশ্রয় নেতে পারমু। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের নেওয়াপাড়া গ্রামে মুজিব কিল্লার পাশেই বসবাসকারী ষাটোর্ধ্ব মো. মুজাম্মিল এ কথাগুলো বলেছন। শুধু নেওয়াপাড়া গ্রামেরই মানুষ নয়। পাশের কাছিমখালী, গান্ধাপাড়া, আনিপাড়া, কামরাপাড়া ও মৌলভীরতবক গ্রামের মানুষও এখন থেকে ঝড়-বন্যার সময় এ কিল্লায় আশ্রয় নিতে পারবে বলে তিনি জানিয়েছেন ।
রবিবার সকাল ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সে গনভবন থেকে মুজিব কিল্লার উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় কলাপাড়া উপজেলা চাকামইয়া ও টিয়াখালী ইউনিয়নের আধুনিক সুবিধা সংবলিত দু’টি মুজিব কিল্লা উদ্বোধন ও ৫ টি মুজিব কিল্লার ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেছেন। উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের নেওয়াপাড়া মুজিব কেল্লা প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী জেল ত্রান ও দূর্যোগ পুনার্বসন কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার সরকার, কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির ও চাকামাইয়া ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির কেরামতসহ স্থানীয় সংবাদকর্মী ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আশপাশে কোনো ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় এই দুটো মুজিব কিল্লা মানুষের একমাত্র নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র হয়ে থাকবে। বাদবাকি প্রকল্প যা আছে তা অল্প সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারবো। এছাড়া ঝড় পরবর্তি সময়ে কিল্লাগুলো স্থানীয় মানুষজন বহুমুখী কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।
পটুয়াখালী জেল ত্রাণ ও দুর্যোগ পুনার্বসন কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার সরকার বলেন, কলাপাড়া উপজেলায় ২৩ মুজিব কিল্লার মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দু’টি উদ্বোধন করেছেন। এছাড়া ৫টি মুজিব কিল্লার কিল্লার ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। বাকি মুজিব কিল্লার কাজ শীঘ্রই সম্পন্ন হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালের প্রলয়ঙ্কারী ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সাহায্যের হাত বাড়াতে কলাপাড়ায় এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭২ সালে দুর্যোগকালীন সময়ে মানুষ ও সম্পদ রক্ষায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মাটি দিয়ে নির্মিত ২৩টি মুজিব কেল্লাগুলোকে আশ্রয়ের জন্য সংষ্কারের নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধু। পরে আধুনিক যুগের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে এসব মুজিব কিল্লায় আধুনিক সুবিধা সংবলিত ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়।