বগুড়ার চার আসনে বিএনপির সাবেক ৪ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী, জানালেন ক্ষোভ
বাংলাদেশ

বগুড়ার চার আসনে বিএনপির সাবেক ৪ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী, জানালেন ক্ষোভ

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ার চারটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপির সাবেক ও পদবঞ্চিত চার নেতা। এর মধ্যে তিন জন বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে নিজ নিজ উপজেলা নির্বাচন অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) অন্যজন মনোনয়নপত্র জমা দেবেন।

দলের সিনিয়র নেতাদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে এই চার প্রার্থী বলছেন, কোনও দলের হয়ে নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা চার জনই জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বলে উল্লেখ করেছেন।

এর মধ্যে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা মোহাম্মদ শোকরানা, বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে জেলা বিএনপির সাবেক মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বিউটি বেগম, বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ও চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. জিয়াউল হক মোল্লা এবং বগুড়া-৭ (শাজাহানপুর-গাবতলী) আসনে সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সরকার বাদল।

মোহাম্মদ শোকরানা বলেন, ‘বগুড়া-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবো। বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেবো। ভোট সুষ্ঠু হলে আমি নির্বাচিত হবো। এখন আমার বয়স ৭৪। এরপর আর ভোট করার বয়স পারমিট করবে না। এবার একটা সুযোগ এসেছে। আগামীতে আবার ভোট কবে হবে-না হবে, তা জানি না। নির্বাচনে যাওয়া ভুল হলো কি ঠিক হলো, তাও বলতে পারছি না।’

বিএনপি বারবার ভোটে না যাওয়ায় একই হতাশার কথা জানালেন বিউটি বেগম। তিনি বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বুধবার বিকালে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা তাহমিনা আকতারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। এই আসনে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’ 

দল থেকে বহিষ্কার হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এই প্রার্থী আরও বলেন, ‘আমরা বিএনপি করতাম। ৩০ জনকে বহিষ্কার করেছিল। তাদের মধ্যে ২৯ জনকে দলে নিয়েছে, আমাকে নেয়নি। অথচ আমি দুবার ভোটে নির্বাচিত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান। ক্ষোভ এখানেই। বিএনপি যোগ্যদের চায় না। তাই প্রার্থী হয়েছি।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে সরকার বাদল বলেন, ‘আমিসহ বিএনপির পদবঞ্চিত ও সাবেক চার নেতা এলাকার ভোটারদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছি। কোনও রাজনৈতিক দলের ব্যানারে নির্বাচন করছি না আমরা। বুধবার বিকালে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলামের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি আমি। আশা করছি, সুষ্ঠু ভোট হলে এখানে আমি জয়ী হবো।’ 

দলের সিনিয়র নেতাদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকার বাদল বলেন, ‘বিএনপি আমাকে পদবঞ্চিত করেছে। নেতাকর্মীরা বলছে, ভোটে দাঁড়ান। আমি উন্নয়ন কর্মী ছিলাম। ভোটে না আসায় বিএনপির নেতাকর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এজন্য ভোট করছি।’

দাসের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে চাই, এজন্য নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ডা. জিয়াউল হক মোল্লা। তিনি বলেন, ‘বিএনপির কোনও সিনিয়র নেতা কমফোর্টেবল নন, তারা নেতাকর্মীদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। আমি এই দাস প্রথা থেকে, দাসের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। বুধবার দুপুরে কাহালু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মেরিনা আফরোজের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। আশা করছি, এই আসনে এবার আমি জয়ী হবো।’ 

Source link

Related posts

৭২ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা: প্রকল্প মেয়াদ শেষ, জাহাজও নেই

News Desk

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দীর্ঘ সময় আটকে থাকার শঙ্কা

News Desk

রাঙামাটিতে পানিবন্দির সংখ্যা বাড়ছে

News Desk

Leave a Comment