বগুড়ায় ঈদের ছুটিতে সারিয়াকান্দির যমুনা নদীর কালিতলা হার্ড পয়েন্ট, প্রেম যমুনার ঘাটসহ নদী তীরে উপচেপড়া ভিড় পড়েছে। বিভিন্ন বয়সী হাজারও মানুষের পদচারনায় পুরো উপজেলা মুখর হয়ে ওঠে। এসব এলাকায় মেলা বসেছে। শুধু নদীর সৌন্দর্য্য উপভোগ নয়; নৌকায় নদীতে ভ্রমণ, নদী তীরে বসানো
নাগরদোলাসহ বিভিন্ন খেলনা আগতদের নির্মল আনন্দ দিচ্ছে। শহরের বাহিরে ঐতিহাসিক মহাস্থান গড়, সান্তাহারে শখের পল্লীসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ভিড় করছেন বিনোদনপ্রেমীরা।
সারিয়াকান্দিতে নবরূপে সজ্জিত কালিতলা হার্ড পয়েন্টে পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছেন বগুড়া শহরের ফুলবাড়ি এলাকার ব্যবসায়ী মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি জানান, এবারের ঈদে ছুটি বেশি। তাই স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে বেড়াতে এসেছেন। শ্যালো চালিত নৌকা ভাড়া নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা যমুনা নদীতে বেড়িয়েছেন। আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকলেও নদীতে নৌকায় গরম লাগেনি। পরিবারের সবাই অনেক দিন পর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ ও সুন্দর সময় কাটিয়েছেন।
বগুড়া শহরের গোদারপাড়া এলাকার নবদম্পতি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও সিরাজুম মনিরা মোটরসাইকেলে সারিয়াকান্দির প্রেম যমুনা ঘাটে এসেছেন। মোটরসাইকেল গ্যারেজে রেখে নৌকায় যমুনা নদীতে বেড়িয়েছেন। কলেজছাত্রী সিরাজুম মনিরা বলেন, তিন মাসের দাম্পত্য জীবনে এটা তার সেরা বিনোদন। নৌকায় যমুনা নদীতে ভ্রমণ ও নদীর তীরে খালি পায়ে হাঁটার কথা অনেক দিন মনে থাকবে।
বগুড়ার শিবগঞ্জের গুজিয়া গ্রাম থেকে আসা ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘মানুষের জীবন যান্ত্রিক হয়ে গেছে। তাই একটু বিনোদনের জন্য কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে সারিয়াকান্দিতে এসেছি। নৌকায় ভ্রমণ ও
নদীর পাড়ে হেঁটে অনেক শান্তি পেয়েছি।’
শ্যালো নৌকার মাঝি শাহাদত ইসলাম জানান, কয়েক বছরের মধ্যে এবার ঈদুল ফিতরের তিন দিন যমুনা নদীর কালিতলা হার্ড পয়েন্ট, দীঘলকান্দি প্রেম যমুনার ঘাটসহ অন্যান্য এলাকায় বিপুল সংখ্যক নারী, শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ ভিড় করেন। পর্যটকদের মধ্যে তরুণ-তরুণীর সংখ্যাই বেশি। তাদের অনেকে নবদম্পতি। যাত্রী বেশি হওয়ায় প্রতিদিন আড়াই থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয়েছে।
সারিয়াকান্দি থানার ওসি রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তার সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বিভিন্ন ঘাট ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে পুলিশ মোতায়েন ছিল। শনিবার বিকাল পর্যন্ত কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।’
এদিকে বিপুল সংখ্যক পর্যটক বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক মহাস্থানগড় ভিড় করেছেন। তারা মহাস্থান যাদুঘর ও ঐতিহাসিক স্থানগুলো পরিদর্শন করেছেন। বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে আধুনিকায়ন করা বিনোদন কেন্দ্র শখের পল্লী
পার্কেও উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শহরের খান্দার এলাকায় ওয়ান্ডার ল্যান্ড ও গোকুলের মম ইন বিনোদন পার্ক দর্শনার্থীতে ঠাসা ছিল।