বগুড়ায় লকডাউনের পরও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না করোনা। প্রতিদিনই বাড়ছে শনাক্ত-মৃত্যু। তিন ধারণের ঠাঁই নেই জেলার দুটি হাসপাতালে। অতিরিক্ত বেড সংযুক্ত করেও করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রোগীদের চাপ নিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বগুড়ায় পৌর এলাকা ও সদর থানায় সর্বাত্মক স্বাস্থ্যবিধি আরোপের পঞ্চম দিনেও মানুষ ও যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। দিনের বেলা পুলিশ কিছুটা যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করলেও মানুষ কথা শুনছে না। প্রচণ্ড চাপে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশকে। এছাড়া রাতেও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষো করে বাজার, দোকান বসছে। চলছে প্রাইভেটকার, সিএনজি থ্রি-হুইলার আটোরিকশাসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করছে।
পৌর এলাকার পুলিশ সুপারের বাসভবনের কয়েক গজ দূরে করতোয়া নদীর পূর্ব পাশে বৌ বাজারে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রতিটি দোকান ও হোটেলে বেচাকেনা চলে। সেখানের জমজমাট চায়ের দোকানে যুবকরা আড্ডায় মেতে ওঠেন। পৌর এলাকার মালতিনগর, রহমান নগর, বাদুড়তলা, সেউজগাড়ীতে মানুষ ঘরে থেকে বেরিয়ে জটলা করে আড্ডা দেন। অথচ জেলা প্রশাসনের বিধিনিষেধে বিকাল ৩টার মধ্যে বাজার বন্ধ রাখার নির্দেশ রয়েছে। এসব অনিয়মের কারণে বগুড়ায় মৃত্যুর মিছিল কমছে না। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবারও বগুড়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আটজন মারা গেছেন।
জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন বৃহস্পতিবার করোনা আপডেট দিতে গিয়ে বলেন, আমারা একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। বগুড়ার করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শেজিমেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আটটি আইসিইউ, পাঁচ এসডিইউসহ ১০০ করোনা শয্যা আছে। তবে রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।
বগুড়া মোহম্মদ আলী হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ১১৬ বেড নির্ধারিত ছিল। করোনা রোগীর চাপ সামাল দিতে আরও ৪৭ বেড বাড়িয়ে এখন ১৬৪ বেডে উন্নীত করা হয়েছে। তবুও সামাল দেয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিন রোগী আসা অব্যাহত আছে। বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শফিক আমিন কাজল বলেন, তাদের হাসপাতালে আটটি আইসিইউ বেডের মধ্যে ছয়টি বেড ভাল আছে অন্য দুইটি বর্তমানে হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার খারাপের কারণে অচল হয়ে রয়েছে।
চিকিৎসকরা বলছেন ক্রান্তিকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলায় সামাজিক সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। লকডাউন আরও কঠোর না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। চিকিৎসকদের করার কিছু থাকবে না। যত দিন সকলকে করোনা টিকার আওতায় না আনা যাবে ততো দিন স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই ।