আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে নতুন সূচিতে চলবে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ২৪ জোড়া (উভয়পথে ৪৮টি) ট্রেন। এতে সর্বনিম্ন ৫ মিনিট থেকে সর্বোচ্চ দেড় পর্যন্ত ভ্রমণ সময় কমে আসবে। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘১ ডিসেম্বর থেকে রেলওয়ের নতুন ওয়ার্কিং টাইম টেবিল (ডব্লিউটিটি)-৫৩ প্রবর্তন হচ্ছে। ট্রেন চলাচলে নতুন সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বেশ কিছু ট্রেনে সময় কমে আসবে।‘
রেলওয়ের এই কর্মকর্তা আরও জানান, আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার অংশে আগে একটি রেললাইন ছিল। এখন তা দুই লেন করা হয়েছে। এ ছাড়া রেলের বহরে যুক্ত হয়েছে অত্যাধুনিক ইঞ্জিন ও কোচ। এ কারণে গতি বাড়ছে ট্রেনে। আগের চেয়ে কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছা যাবে।’
রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেলের ভাষায় সময়সূচিকে ‘ওয়ার্কিং টাইম টেবিল’ বলা হয়। রেলের সর্বশেষ ওয়ার্কিং টাইম টেবিল (ডব্লিউটিটি)-৫২ প্রণয়ন করা হয়েছিল ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি। প্রায় চার বছর পর ডিসেম্বরের প্রথম দিন থেকে ডব্লিউটিটি-৫৩ প্রণয়ন করতে যাচ্ছে রেলওয়ের পরিবহন বিভাগ।
চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন কখন ছাড়বে
রেলের নতুন প্রবর্তিত ডব্লিউটিটি-৫৩ অনুসারে, পূর্বাঞ্চলে উল্লেখযোগ্য ট্রেনগুলোর মধ্যে ‘সুবর্ণ এক্সপ্রেস’ এখন সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম স্টেশন ছাড়লেও নতুন সূচিতে ছাড়বে সকাল সাড়ে ৭টায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম যাতায়াতে সময় লাগতো ৫ ঘণ্টা ২০ মিনিট। এখন লাগবে ৪ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট।
ঢাকাগামী ‘সোনার বাংলা এক্সপ্রেস’ ট্রেন ছাড়ে বিকাল ৫টায়। নতুন সময় সূচি অনুযায়ী ছাড়বে পৌনে ৫টায়। এতে গন্তব্যে পৌঁছা যাবে ৪ ঘণ্টা ৫৫ মিনিটেই। বর্তমানে লাগছে ৫ ঘণ্টা ১০ মিনিট।
ঢাকাগামী মহানগর ‘গোধুলী’ আগের মতোই ছাড়বে বেলা ৩টায়। এতে গন্তব্যে পৌঁছা যাবে ৫ ঘণ্টা ৫৫ মিনিটে। বর্তমানে লাগছে ৬ ঘণ্টা ২৫ মিনিট। ঢাকাগামী ‘মহানগর এক্সপ্রেস’ চট্টগ্রাম থেকে ছাড়বে দুপুর সাড়ে ১২টায়। গন্তব্যে পৌঁছা যাবে ৬ ঘণ্টা ১৫ মিনিটে। বর্তমানে লাগছে ৬ ঘণ্টা ৪০ মিনিট।
‘চট্টলা এক্সপ্রেস’ বর্তমানে সকাল সাড়ে ৮টায় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এটি পৌঁছায় বেলা ৩টা ৫০ মিনিটে। নতুন সময় অনুযায়ী, এই ট্রেন চট্টগ্রাম স্টেশন ছাড়বে সকাল ৬টায়। ঢাকায় পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে। সময় লাগবে ৬ ঘণ্টা ১০ মিনিট। বর্তমানে সময় লাগছে ৭ ঘণ্টা ২০ মিনিট।
‘তূর্ণা এক্সপ্রেস’ এখন রাত ১১টায় ছাড়লেও নতুন সময়সূচি অনুযায়ী ছাড়বে রাত সাড়ে ১১টায়। তবে আধা ঘণ্টা দেরিতে ছাড়লেও পৌঁছাবে আগের মতো ভোর ৫টা ১০ মিনিটে। এতে সময় লাগবে ৫ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। বর্তমানে সময় লাগছে ৬ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট।
সিলেটগামী ‘পাহাড়িকা এক্সপ্রেস’ ট্রেন সকাল ৭টা ২০ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ছাড়লে নতুন সময়সূচি অনুযায়ী ছাড়বে সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে। পৌঁছবে আগের মতোই বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে। বর্তমানে যেখানে ৯ ঘণ্টা ১০ মিনিটে পৌঁছালেও নতুন সূচিতে লাগবে ৮ ঘণ্টা ৪০ মিনিট।
চাঁদপুরগামী মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেন বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে ছাড়লেও নতুন সূচিতে ছাড়বে সন্ধ্যা ৬টায়। সময় লাগবে ৪ ঘণ্টা। এতে সময় লাগবে ৪ ঘণ্টা ১০ মিনিট। চাঁদপুর থেকে মেঘনা এক্সপ্রেস ছাড়বে ভোর ৫টায়।
ময়মনসিংহগামী ‘বিজয় এক্সপ্রেস’ নতুন সূচি অনুযায়ী চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ছাড়বে সকাল সোয়া ৯টা ১৫ মিনিটে। ট্রেনটি এতদিন ময়মনসিংহ পর্যন্ত গেলেও ১ ডিসেম্বর থেকে এ ট্রেন যাবে জামালপুর পর্যন্ত। জামালপুর পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে। এতে সময় লাগবে ১০ ঘণ্টা ২০ মিনিট। এটিই হচ্ছে পূর্বাঞ্চল ট্রেনের সবচেয়ে বেশি দূরত্বের ট্রেন।
ঢাকা থেকে ট্রেন কখন ছাড়বে
সিলেটগামী ‘উপবন এক্সপ্রেস’ ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে রাত সাড়ে ৮টায় ছাড়লেও নতুন সূচি অনুযায়ী ছাড়বে রাত ১০টায়। পৌঁছাবে আগের মতোই ভোর ৫টায়।
সিলেটগামী ‘পারাবাত এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ছাড়বে সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে। এই ট্রেন এখন ছাড়ে ৬টা ২০ মিনিটে। সিলেট পৌঁছাবে আগের মতোই দুপুর ১টায়। সিলেট থেকে ‘পারাবত এক্সপ্রেস’ ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবে বেলা সাড়ে ৩টায়।
যাতায়াতে ৫ মিনিট সময় বেড়েছে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া সিলেটগামী ‘কালনী এক্সপ্রেস’ ট্রেনে। ঢাকা থেকে ট্রেনটি বিকাল ৩টায় ছেড়ে রাত সাড়ে ৯টায় বর্তমানে পৌঁছে। নতুন সূচি অনুযায়ী ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছাড়বে বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে।
এছাড়া, নতুন সূচি অনুযায়ী ‘ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস’ ঢাকা থেকে ছাড়বে সন্ধ্যা সোয়া ৬টা ১৫ মিনিটে। ট্রেনটি জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌঁছাবে ১১টা ৫০ মিনিটে। জামালপুরের তারাকান্দিগামী আরেক ট্রেন ‘যমুনা এক্সপ্রেস’ ছাড়বে ৪টা ৪৫ মিনিটে। আর নেত্রকোণার মোহনগঞ্জগামী ‘হাওর এক্সপ্রেস’ ছাড়বে ১০টা ১৫ মিনিটে।