বন্যার পানি দেখতে মানুষের ভিড়
বাংলাদেশ

বন্যার পানি দেখতে মানুষের ভিড়

ভারত থেকে আসা পানি আর টানা বৃষ্টিতে বেড়েছে কুমিল্লার গোমতীর নদীর পানি। এতে গোমতীর আশপাশের এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। বাড়িঘরে পানি ঢুকে ঘর ছাড়া কয়েক হাজার মানুষ। কিন্তু গোমতীর পালপাড়া, চাঁনপুর টিক্কারচর ব্রিজসহ গোমতীর বেড়িবাঁধ এলাকায় গেলে তা বোঝার উপায় নেই। সেখানে মানুষের বন্যা ও বৃষ্টি দেখতে আসা মানুষের ভিড়। একদিকে আর্তনাদ অন্যদিকে উৎসবের আমেজ। উৎসুক জনতার ভিড়ে যেন পিকনিক স্পটে রূপ নিয়েছে গোমতীর পাড়।

জানা গেছে, বুধবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় গোমতীর পানি বিপদসীমার মাত্র এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে গোমতীর সদর উপজেলার পাঁচথুবি ও আমড়াতলী ইউনিয়নের জনসাধারণকে নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।

এদিকে সব প্রাইমারি, হাই স্কুল ও মাদ্রাসাকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু গোমতীর পালপাড়া ও টিক্কারচর ব্রিজসহ আশপাশের এলাকায় সকাল থেকেই উৎসুক জনতার ভিড় দেখা গেছে। অনেকে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও রিকশা নিয়ে আসছেন ঘুরতে। সেলফি ও ছবিতে মেতে উঠেছেন। বিনোদনের স্বাদ আরও বাড়াতে এসেছে স্ট্রিট ফুডের দোকান ও হকাররা। 

এর দুই কিলোমিটার দূরেই জালুয়াপাড়া গ্রাম। গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের এলাকার সঙ্গে এটিও প্লাবিত হয়েছে। সবজির জমি ডুবে গেছে। ডুবু ডুবু পানিতে সবজি ভাসিয়ে আনছেন আবুল বাশার নামের এক কৃষক। তিনি বলেন, আমাদের লাখ টাকার সবজি শেষ। সব পানিতে তলিয়ে গেছে। আমরা সাঁতরে সাঁতরে গিয়ে এগুলো আনি। মানুষ আসে আমাদের ছবি ভিডিও করতে। এগুলা দেখে কষ্ট হয়। 

বন্যার পানি দেখতে মানুষের ভিড়

মাঝি গাছা বাগানবাড়ির শেফালি বেগম নামের একজন বলেন, কিছুই সরাতে পারিনি। সবই ভেসে গেছে। ঘরে তালা দিয়ে রাখছিলাম। ভাবছিলাম যাবে না। ঘরটাও পানিতে ভাসতেছে। মানুষ শুধু দেখতে আসে। কেউ সহযোগিতা করতে আসে না। তবে সকাল থেকে কয়েকটা ছেলেকে দেখলাম কাজ করছে। তারা আমাদের কিছু জিনিসপত্রও এনে দিয়েছিল। শুনছি তারা ছাত্র। এখানে কাজ করতে এসেছে।

ক্যান্টনমেন্ট বাংলাবাজার থেকে আসা কবির হোসেন বলেন, চাঁনপুরের পানি বাড়িতে পানি ঢুকেছে। সেখানে গিয়ে ছেলে মেয়েদের অন্য জায়গায় শিফট করে দিয়ে আসছিলাম। এখন চাঁনপুর ব্রিজের কাছে আসলাম দেখতে। পানি বেড়েছে। অনেকেই দেখতে আসছেন। অনেকে ছবি ভিডিও তুলে ফেসবুকেও দিচ্ছেন। 

বন্যার পানি দেখতে মানুষের ভিড়

শহর থেকে ঘুরতে যাওয়া তানভির ইসলাম বলেন, বন্যা দেখতে এলাম। বৃষ্টি এনজয় (উপভোগ) করার বিষয় আছে। তবে এটা সত্যি যে বন্যায় অনেকের ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। অনেকে এসেছেন সহযোগিতা করতে। আমরা ঘুরতে এসেছি। সুযোগ পেলে সহযোগিতা করবো।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, গোমতীর পানি ক্রমাগত বাড়ছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরা দেখেছি গোমতীর পানি বিপদসীমার এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

Source link

Related posts

দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কাজ করার আহ্বান

News Desk

মোবাইল কোর্ট সরে গেলেই ১২০ টাকার পেঁয়াজ ২০০

News Desk

ভুট্টার ক্ষেতে মিললো চা দোকানির লাশ

News Desk

Leave a Comment