বাদীকে আসামি বানালেন পেশকার, মুক্তি পেলেন সাজাপ্রাপ্ত কনস্টেবল
বাংলাদেশ

বাদীকে আসামি বানালেন পেশকার, মুক্তি পেলেন সাজাপ্রাপ্ত কনস্টেবল

বগুড়ায় যৌতুকের মামলায় দেড় বছরের সাজাপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল আনোয়ার হোসেন জুয়েলকে গ্রেফতার না দেখিয়ে রবিবার (১২ জুন) কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাকে মুক্তি দেওয়ার পরই এই নিয়ে শুরু হয় তোলপাড়। তবে আদালত থেকে পাঠানো আদেশের কপিতে সাজাপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবলকে আসামি হিসেবে উল্লেখ না করায় মুক্তি দিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। পেশকার ভুল করে মামলার বাদীর নামই আসামি হিসেবে আদেশের কপিতে উল্লেখ করে দিয়েছেন। তার ভুলে এমন কাণ্ড ঘটেছে।

এদিকে, সোমবার আসামি আনোয়ার হোসেন জুয়েলকে আদালতে তোলার কথা থাকলেও তাকে উপস্থিত করা যায়নি।

আদালত সূত্র জানায়, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ সার্কেল অফিসের কনস্টেবল কাম কম্পিউটার অপারেটর আনোয়ার হোসেন জুয়েল বগুড়া শিবগঞ্জের মোকামতলা ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামের মৃত আনসার আলীর ছেলে। তিনি একই উপজেলার শিয়ালী মাস্টারপাড়ার মৃত ওসমান আলীর মেয়ে খাতিজা আকতারকে বিয়ে করেন। স্ত্রী তার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করে। এ ছাড়া স্ত্রীর বড় বোন সেলিনা আকতার জুয়েলের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির মামলা করেন।

যৌতুক মামলায় বগুড়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩ আদালত তাকে এক বছর পাঁচ মাস সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। আসামি পলাতক থাকায় বিচারক সঞ্চিতা ইসলাম গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর সাজা পরোয়ানা জারি করেন। অপরদিকে, চেক জালিয়াতির মামলায় বগুড়ার প্রথম যুগ্ম জজ আদালত তাকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও চার লাখ টাকা জরিমানা করেন।

পলাতক থাকায় ওই মামলায় গত ১৭ মে সাজা পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এদিকে, পুলিশ দুটি মামলার সাজা পরোয়ানামূলে আনোয়ার হোসেন জুয়েলকে গ্রেফতার ও গত ৯ জুন (বৃহস্পতিবার) বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠায়। রবিবার যুগ্ম জজ তৈয়ব আলীর আদালতে হাজির করে দুই লাখ টাকা জমা দিয়ে জামিন প্রার্থনা করলে তা মঞ্জুর করা হয়। যৌতুক মামলায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা শায়লা সাজাপ্রাপ্ত আসামি আনোয়ার হোসেন জুয়েলকে গ্রেফতার দেখাতে (শ্যোন অ্যারেস্ট) ও ১৩ জুন আদালতে হাজির করতে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন।

বগুড়া কারাগারের জেলার এস এম মহিউদ্দীন হায়দার জানান, আদালতের আদেশ আসা ও অন্য কোনও ওয়ায়েন্ট না থাকায় রবিবার বিকাল ৫টা ২৫ মিনিটে আসামি আনোয়ার হোসেন জুয়েলকে মুক্তি দেওয়া হয়। বিকাল ৬টা ১০ মিনিটে খাতিজা আকতারের নামে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জেলে এলে ডেপুটি জেলার শাহরিয়ার তা গ্রহণ করেন। কিন্তু জেলে এ নামে কোনও আসামি ছিল না। আদালতের পেশকারের ভুলে ও সময়মতো কাগজপত্র না আসায় আসামি ছাড়া পেয়েছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সাজিদ ওয়াসিক বাঁধন দাবি করেন, ‘জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩ আদালতের পেশকার জুয়েল হোসেন জানিয়েছেন, তিনি সময়মতো জেলে যৌতুক মামলার আসামি আনোয়ার হোসেন জুয়েলের নামে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট পাঠিয়েছেন। এরপর আমি সাংবাদিকদের বিষয়টি জানাই। পেশকার অজ্ঞাত কারণে বিলম্বে ভুল আদেশ জেলে পাঠানোয় আসামি ছাড়া পেয়েছেন।’

এ প্রসঙ্গে রবিবার দুপুরে পেশকার জুয়েল হোসেন দাবি করেন, তিনি ভুলবশত বাদীকে আসামি সাজিয়ে ও বিলম্বে জেলে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট পাঠিয়েছেন। সোমবার আসামিকে হাজির করা হয়নি। এ বিষয়ে আদালত পরে সিদ্ধান্ত জানাবেন।

Source link

Related posts

৬৬ কোটি টাকার গরমিল, বানকো সিকিউরিটিজের লেনদেন বন্ধ

News Desk

বিএনপির নামে পণ্যবাহী ট্রাক থেকে দিনে ৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজি

News Desk

উন্নয়ন কখনো গণতন্ত্রের বিকল্প নয়: মাহবুব তালুকদার

News Desk

Leave a Comment