অবশেষে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে পাইকগাছা-কয়রার বহুল প্রত্যাশিত বিদ্যুতের ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র। ইতোমধ্যে উপকেন্দ্রের জন্য পাঁচ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অধিগ্রহণ করা জমি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি) বুঝে নিয়েছে। মাটি ভরাটসহ অন্যান্য অবকাঠামোর কাজ টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলে দ্রুত শুরু করা হবে। উপকেন্দ্রটি চালু হলে বিদ্যুৎ নিয়ে উপকূলীয় এই বিস্তীর্ণ এলাকার দীর্ঘদিনের সমস্যা নিরসন হবে বলে আশা করছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যুৎ নিয়ে নানা সমস্যার মধ্যে রয়েছেন পাইকগাছা-কয়রার সাধারণ গ্রাহকরা। দীর্ঘ লাইন হওয়ার কারণে ছোট-খাটো ত্রুটি মেরামতে হিমশিম খেতে হয় বিদ্যুৎ বিভাগকে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কয়রার বিদ্যুৎ লাইন সাতক্ষীরা থেকে সংযুক্ত। আর পাইকগাছার লাইন এসেছে খুলনা থেকে। দুই উপজেলার বিদ্যুৎ লাইনের দূরত্ব ৭০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। এতো দীর্ঘ লাইন দেশের আর কোথাও নেই বললেই চলে। অধিক দূরত্বের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বৈরী আবহাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। একটু বাতাস হলেই বিদ্যুৎ লাইনের ত্রুটি দেখা দেয়। ত্রুটি চিহ্নিত করে তা মেরামত করতে গিয়ে দীর্ঘ সময় চলে যায়। ফলে গ্রাহকরা দীর্ঘদিন চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন।
উপকূলীয় এই এলাকায় বিদ্যুতের উপকেন্দ্র না থাকায় এ ধরনের সমস্যা দীর্ঘদিনের। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করাসহ সাধারণ গ্রাহকদের ভোগান্তি দূর করতে তৎকালীন সংসদ সদস্য মরহুম আলহাজ অ্যাডভোকেট শেখ মো. নূরুল হক উদ্যোগী হন এলাকায় বিদ্যুতের গ্রিড উপকেন্দ্র স্থাপনে; যা এখন আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার রেজায়েত আলী জানান, ইতোমধ্যে শিববাটী ব্রিজের ওপারে কাটাখালী সড়কের পাশে শরণখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-সংলগ্ন চকবগুড়া মৌজায় পাঁচ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এই জমি হস্তান্তর করে।
অধিগ্রহণ করা সম্পত্তি বুঝে নিয়েছেন পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি)-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পিজিসিবির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম ও নির্বাহী প্রকৌশলী উত্তমকুমার। ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় হচ্ছে ছয় কোটি টাকা। মাটি ভরাট ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া খুব দ্রুত সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম রেজায়েত আলী। তিনি বলেন, ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রটি চালু হলে বিদ্যুৎ নিয়ে এই এলাকায় আর কোনো সমস্যা থাকবে না। সাধারণ ঝড় ও বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অন্যান্য এলাকার মতোই থাকবে।