বিনা খরচে একসঙ্গে ১৬ জনের বিয়ে, পেলেন কক্সবাজারে ফ্রি হানিমুন প্যাকেজ
বাংলাদেশ

বিনা খরচে একসঙ্গে ১৬ জনের বিয়ে, পেলেন কক্সবাজারে ফ্রি হানিমুন প্যাকেজ

বিনা খরচে বিয়ে করেছেন ১৬ জন বর-কনে। সেইসঙ্গে পেয়েছেন বিয়ের সাজসজ্জা, প্রসাধনী সামগ্রী, গয়না, ঘরের আসবাবপত্র, ১০০ অতিথির খাবার ও কক্সবাজারে হানিমুন প্যাকেজ। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া থানার কে.বি কনভেনশন সেন্টারে একসঙ্গে ১৬ জন পাত্র-পাত্রীর বিয়ে পড়ান ইসলামি বক্তা শায়খ আব্দুল হাই সাইফুল্লাহ। 

‘বিয়ে আপনার, খরচ আমাদের’ স্লোগানে চট্টগ্রামের শামসুল হক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এসব বিয়ের আয়োজন করা হয়। আয়োজনের সব খরচ বহন করেছে এই ফাউন্ডেশন। এসব বিয়ের অন্যতম শর্ত ছিল—বিয়ে হবে যৌতুকবিহীন এবং নির্ধারিত দেনমোহর কনেকে নগদ পরিশোধ করতে হবে। পুরো আয়োজনটি ইসলামি সুন্নাহ অনুযায়ী সম্পন্ন হয়েছে। যৌতুক ও দেনমোহরের ভারমুক্ত বিয়ের উদাহরণ সৃষ্টি করতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়। 

আয়োজনের মধ্যে ছিল- বিয়ের সাজসজ্জা, প্রসাধনী সামগ্রী, গয়না, ঘরের আসবাবপত্র, প্রতিটি বিয়েতে বর-কনেপক্ষের ১০০ অতিথির আট পদের খাবারের ব্যবস্থা ও কক্সবাজারে হানিমুন প্যাকেজ।

বিনা খরচে বিয়ে করতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন নবদম্পতিরা। একজন বর জানিয়েছেন, এই ধরনের আয়োজন চট্টগ্রাম বিভাগের বাইরে গিয়ে সারা দেশে আয়োজন করা গেলে ভালো হতো।

আরেকজন বর জানান, বিয়েকে সহজ করার জন্য শামসুল হক ফাউন্ডেশন যে আয়োজন করেছে, তার জন্য সাধুবাদ জানাচ্ছি। এই আয়োজন সাড়া দেশে ছড়িয়ে পড়লে যৌতুক প্রথা সমাজ থেকে দূর হবে।

শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২০০৯ সালে আমার বিয়ের সময় দেখেছি আত্মীয়-স্বজন অনেকে বলেছেন যৌতুক নয়, তারা উপহার দেবেন। সেই উপহার নিলে ক্ষতি কী? আমি এর সরাসরি ভুক্তভোগী। যৌতুক প্রথা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পৌঁছে গেছে। আজকের আয়োজন শুধু বিয়ে নয়, একটি সামাজিক আন্দোলন। আমরা যৌতুক প্রথা চিরতরে নিশ্চিহ্ন করতে চাই। একজন বাবা তার মেয়েকে জন্ম দেওয়ার পর থেকে লালন পালন করে বিয়ে দেওয়ার কথা ভাবেন। অথচ বিয়ের সময় বাবার মুখে হাসি থাকে না। মেয়ের বিয়ের জন্য টাকার জোগান খোঁজেন বাবা। এটি বাবার জন্য চরম লজ্জার এবং হতাশার। এটি থেকে বের হওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’

আজ যৌতুকবিহীন ১৬ জন বর-কনের বিয়ে সম্পন্ন করেছি আমরা উল্লেখ করে নাছির উদ্দিন আরও বলেন, ‘আমাদের এই আয়োজনের ফলে দেশের কোনও বাবা যৌতুকের দায়ে ঋণগ্রস্ত থাকবে না। আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে আবারও রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু হবে। সামনের বিয়েগুলো অনুষ্ঠিত হবে রংপুর বিভাগে। ঐতিহাসিক আয়োজন হিসেবে সেখানে থাকবে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের আয়োজন।’

শামসুল হক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, বিয়ে আপনার, খরচ আমাদের স্লোগানে শামসুল হক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভ বিবাহ শিরোনামে ১৬ জনের বিয়ের আয়োজন করা হয়। দেনমোহরের বিশাল অঙ্ক এবং যৌতুকের ভার বহু পরিবারের জন্য অসহনীয় হয়ে উঠেছে। সমাজবিরোধী এই প্রথা বন্ধ করতে সহজ পদ্ধতিতে বিয়ে এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য। যৌতুকবিহীন এবং দেনমোহর পরিশোধের শর্তে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত আবেদন সংগ্রহ করা হয়। দেশের বিভিন্ন জেলা, দুবাই, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য ও ভারতসহ কয়েকটি দেশ থেকে ৫৯৫ জন পাত্র-পাত্রী আবেদন করেন। সেখান থেকে বাছাই করে ১৬ জনের বিয়ের আয়োজন করা হয়।

Source link

Related posts

চট্টগ্রামে জোড়া খুনের রহস্য উদঘাটন

News Desk

সরকারের চলতি মেয়াদেই যশোরে হবে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল: কাজী নাবিল

News Desk

কুড়িগ্রামে আবারও বাড়ছে নদ-নদীর পানি, শঙ্কায় কৃষকরা

News Desk

Leave a Comment