Image default
বাংলাদেশ

বীর মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসা চলছে হাত পেতে

রংপুর মহানগরীর মাহিগঞ্জের ধুমখাটিয়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন (৭৯)। দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়েছেন একাত্তরে। এখন লড়ছেন বার্ধক্যের বিরুদ্ধে, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে। চিকিৎসা চলছে ধারদেনা আর মানুষের কাছে হাত পেতে।

দেশের এই বীর সন্তানের জীবন কাটছে নগরীর মাহিগঞ্জের একটি ভাড়া বাসায়। দিনের পর দিন বিছানায় শুয়ে থাকতে হয় তাকে। চিকিৎসকরা বলছেন আব্দুল বাতেনের হার্টের চারটি ভাল্বই ব্লক হয়ে গেছে। জরুরি অস্ত্রোপচার দরকার। কিন্তু সে টাকা যোগাড় হচ্ছে না কিছুতেই।

ইস্ট পাকিস্তান রেজিমেন্ট (ইপিআর)-এর নিয়মিত সদস্য ছিলেন আব্দুল বাতেন। দীর্ঘ কর্মময় জীবনে অবসরের পর মাহিগঞ্জের একটি বাসা ভাড়া নিয়ে মুদির দোকান চালিয়ে পরিবার নিয়ে জীবন কাটিয়ে আসছিলেন। অর্থাভাব থাকলেও এলাকায় সম্মান ও শ্রদ্ধার কখনও কমতি ছিল না। এতেই তুষ্ট ছিলেন। তবে জীবন সায়াহ্নে এসে হয়ে অসহায় পড়েছেন। টাকার অভাবে করাতে পারছেন না চিকিৎসা।

দু’চোখে ঝাপসা দেখেন বাতেন। কানেও কম শোনেন। হাঁটাচলাও করতে পারেন না খুব একটা।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তার বেসামরিক গেজেট নম্বর-২৬৫ এবং মুক্তিযোদ্ধা নম্বর ০১৮৫০০০১৫৩৪। লাল মুক্তিবার্তা নম্বর ৩১৩০১০২৩৫। বললেন, ‘প্রতি মাসে ভাতার যে টাকা পাই তা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। শেষ জীবনে মাথা গোঁজার ঠাঁইও হয়নি।’

আব্দুল বাতেনের ছেলে খুরশিদ আলম বলেন, ‘বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়েও সরকারের অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি করে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসাও পাচ্ছেন তারা। বাবার অসুস্থতার বিষয়টি রংপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জামুকাসহ প্রধানমন্ত্রীর দফতরেও লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও সাড়া পাইনি। চিকিৎকের পরার্মশে গত ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বরে জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে যাই। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার চিকিৎসকরা ওপেন হার্ট সার্জারির পরামর্শ দেন। এর পর ২৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করাই। সেখানে পরীক্ষার পরও সার্জারির কথা বলা হয়। অর্থের অভাবে সেটা করাতে পারিনি। বাবাকে নিয়ে আবার বাসায় চলে আসি।’

রংপুর সিটি করপোরেশনের স্থানীয় ওর্য়াড কাউন্সিলর মোক্তার হোসেন জানান, ‘দীর্ঘদিন থেকে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন শয্যাশায়ী। আমরা আর্থিকভাবে সহায়তার চেষ্টা করছি।’

রংপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু জানান, ‘আব্দুল বাতেন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি অসহায় জীবন-যাপন করছেন। পরিবারে আয়ের উৎস নেই। তার পাশে আমাদের সবার দাঁড়ানো উচিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারত সরকার প্রতি বছরে একশ মুক্তিযোদ্ধাকে চিকিৎসা সেবা দেয়। রংপুর থেকে আমাদের কোটা রয়েছে দু’জনের। আমরা যে দু’জন মুক্তিযোদ্ধার নাম ভারতে পাঠিয়েছি, সেখানে আব্দুল বাতেনের নাম দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেনের চিকিৎসার জন্য আট থেকে দশ লাখ টাকা প্রয়োজন।’

সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেনের স্বজনরা। সাহায্য পাঠানোর অ্যাকাউন্ট নম্বর- ০১৯০২৬০০০০৬২ সোনালী ব্যাংক, রংপুর করপোরেট শাখা।

Source link

Related posts

স্ত্রী হত্যার দায়ে শিক্ষক স্বামীর ফাঁসির রায়

News Desk

মোংলা থেকে ৩২০ কিলোমিটার দূরে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’

News Desk

‘আমি এক শহীদের বাবা, ছেলে সত্য প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করেছে’

News Desk

Leave a Comment