এ বছর নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে ১৬ শিক্ষার্থী বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) রাতে বুয়েটের ২০২১-২২ ব্যাচের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা গেছে, ওই প্রতিষ্ঠানের ১৬ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এর মধ্যে নাহিদ হোসেন রিদম মেধা তালিকায় পঞ্চম স্থান অর্জন করেছেন। বাকিদের মধ্যে একজন মেয়ে ও ১৫ জন ছেলে।
কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম আহমেদ ফারুক জানান, কলেজটি থেকে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী বুয়েটেসহ বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন। রেকর্ড পরিমাণ শিক্ষার্থী বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে।
১৬ শিক্ষার্থীদের মধ্যে নাহিদ হোসেন রিদম পঞ্চম হয়ে কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে, সঞ্জয় কুমার সেন ১৬১তম হয়ে তড়িৎ ও বৈদ্যুতিক প্রকৌশলে, ইমন ইসলাম ৪৪৪তম হয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে, আরাফাত আফ্রিদি রোমান ৫২৬তম হয়ে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে, আবু সায়েম ৫৩০তম হয়ে মেকানিক্যালে, আরিফ শাহরিয়ার সজীব ৫৭০তম হয়ে মেকানিক্যালে, তাহমিদ আহমেদ তনয় ৬৩৯ হয়ে মেকানিক্যাল বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
অপরদিকে, মাহমুদুল হাসান ৬৪০তম হয়ে মেকানিক্যালে, মাহবুব ইসলাম ৭৬২তম হয়ে সিভিলে, গোলাম আজম ৭৬৬ তম হয়ে শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশলে, নবদ্বীপ চন্দ্র রায় ৮০৮তম হয়ে সিভিলে, এস এম সিয়াম মাহিম ৯৫৩তম হয়ে শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশলে, সুদীপ্ত চন্দ্র রায় ৯৮৯তম হয়ে কেমিক্যালে, এম এ এইচ কে লাবিব ১০৮৬তম হয়ে বস্তু ও ধাতব প্রকৌশলে, শামসুজ্জামান সাফিন ১১১৬তম হয়ে বস্তু ও ধাতব প্রকৌশলে ও জাকিয়া সুলতানা জীম ১২০৩তম হয়ে নেভাল আর্কিটেকচার বিভাগে ভর্তির সুযোগ পান।
অধ্যক্ষ বলেন, ‘বরাবরই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল করে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এ বছর আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৯ জন মেডিক্যালে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল। গত বছরও ১১ জন বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পায়। আমরা সেভাবেই শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করে থাকি। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। শিক্ষার্থীদের এই অর্জনে অভিভাবকসহ আমরা সবাই গর্বিত। আমাদের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস চালু ছিল। এ বিষয়ে অভিভাবকদের সহযোগিতা পেয়েছি। শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও অভিভাবকদের সম্মিলিত চেষ্টায় আমরা ধারাবাহিক সাফল্য দেখাতে পারছি।’
পঞ্চম হওয়া নাহিদ হোসেন রিদম বলেন, ‘আমাদের কলেজের শিক্ষকরা শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক আন্তরিক। আমি শিক্ষকদের মানবিক আচরণে মুগ্ধ। তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমাদের এই অর্জন। আমি স্যারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
উল্লেখ্য, ১৯৬৪ সালে দেশের চারটি শিল্পাঞ্চলে টেকনিক্যাল স্কুল গড়ে ওঠে। দেশের সর্ববৃহৎ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার সুবাদে এখানেও গড়ে ওঠে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। উদ্দেশ্য ছিল এখান থেকে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার জন্য দক্ষ, কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন শিক্ষার্থী গড়ে তোলা। পরে ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি কলেজে উন্নীত হয়। কলেজের আগে নাম ছিল সরকারি কারিগরি মহাবিদ্যালয়। ২০১৯ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নাম পরিবর্তন করে কলেজের নাম রাখে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ।