ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোটের প্রচারণায় সরকারি কর্মচারী
বাংলাদেশ

ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোটের প্রচারণায় সরকারি কর্মচারী

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে কুড়িগ্রামের উলিপুরে নির্বাচনি আচরণবিধি ও সরকারি চাকরি বিধিমালা ভঙ্গ করে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নেমেছেন এক স্বাস্থ্য সহকারী। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাওয়া ও লিফলেট বিতরণসহ প্রচারণায় অংশ নেওয়ার বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ারও দিচ্ছেন তিনি।

ওই স্বাস্থ্য সহকারীর নাম আব্দুল ওহাব। তিনি উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য সহকারী পদে কর্মরত। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনি আচরণবিধিমালা অনুযায়ী কোনও সরকারি কর্মচারী নির্বাচনপূর্ব সময়ে নির্বাচনি এলাকায় প্রচারণা বা নির্বাচনি কার্যক্রম করতে পারবেন না। তিনি নির্বাচনি এলাকায় ভোটার হলে শুধু ভোট প্রদান করতে পারবেন।

নির্বাচনি প্রচারণায় স্বাস্থ্য সহকারী আব্দুল ওহাবের অংশ নেওয়ার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে স্বাস্থ্য সহকারী আব্দুল ওহাব ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থী ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবু সাঈদ সরকারের পক্ষে প্রচারণা শুরু করেন। গত ২ মে প্রতীক বরাদ্দের দিন তিনি সরকারি চাকরির দায়িত্ব পালন না করেই ওই প্রার্থীর সঙ্গে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। সেই ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আব্দুল ওহাব অফিস চলাকালীন সময়ে নিজ এলাকা হাতিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু সাঈদ সরকারের (টিয়া পাখি প্রতীক) পক্ষে বাড়ি বাড়ি গিয়ে লিফলেট বিতরণ করে ভোট প্রার্থনা করছেন। প্রার্থীর পক্ষে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে ভোট চাচ্ছেন। সেসব প্রচারণার ছবি ফেসবুকে নিজ আইডি থেকে প্রতিনিয়ত পোস্ট ও শেয়ার করছেন। তার এমন কর্মকাণ্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সরকারি চাকরি আইন ও নির্বাচনি বিধিমালা লঙ্ঘন করে একজন সরকারি চাকরিজীবীর এমন কর্মকাণ্ডে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী আরেক প্রার্থী (টিউবওয়েল প্রতীক) আজাহার আলী সরকার রাজা। তিনি বলেন, ‘এভাবে চলতে পারে না। এটা নির্বাচনের পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমি ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।’

প্রার্থীর হয়ে প্রচারণায় অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত স্বাস্থ্য সহকারী আব্দুল ওহাব। তবে তিনি নিজের এমন কর্মকাণ্ডকে ‘ভুল হয়েছে’ বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আমি প্রচারণা চালিয়েছি। আমার ভুল হয়েছে। এজন্য মঙ্গলবার (৬ মে) অফিস থেকে আমাকে সতর্ক করা হয়েছে। আমি আর এমনটা করবো না।’

প্রার্থীর সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক প্রশ্নে ওহাব বলেন, ‘আমার সঙ্গে তার কোনও আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই। প্রচারণায় অংশ নিয়ে আমি ভুল করেছি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘সরকারি চাকরি করে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেওয়া বিধিসম্মত নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুর-এ-মোর্শেদ বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আতাউর রহমান বলেন, ‘সরকারি চাকরিরত অবস্থায় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে জানতে রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. বরমান হোসেনকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Source link

Related posts

ঢাকার সমাবেশ থেকে সরকার পতনের কর্মসূচি ঘোষণা: ড. মোশাররফ

News Desk

জনতার বাজারে উঠেছে অর্ধ লাখ গরু, দাম কেমন?

News Desk

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা বললেন চিকিৎসক

News Desk

Leave a Comment