Image default
বাংলাদেশ

ভারতে হয়নি সুরাহা, টানা ৪ দিন বেনাপোলে আমদানি-রফতানি বন্ধ

ভারতীয় বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ধর্মঘটের ফলে চতুর্থ দিনের মতো বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। গত চার দিন পেট্রাপোলসহ কলকাতায় দফায় দফায় বৈঠক হলেও হয়নি সুরাহা।

বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালেও কলকাতার শুল্ক দফতরের সঙ্গে ক্লিয়ারিং এজেন্টদের বৈঠক হয়েছে। একই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবান্ন অফিসে দেশটির মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তারা আলাদা বৈঠক করেও কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। ফলে দুই দেশের বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরে আটকা পড়েছে প্রায় দেড় হাজার পণ্যবাহী ট্রাক।

তবে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল বন্দরে পণ্য খালাস, পণ্য ওঠানামা ও শুল্ক ভবনের কাজকর্মসহ দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে।

জানা গেছে, ভারতীয় বিএসএফ ও পেট্রাপোল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটির হঠকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, পেট্রাপোল এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন, সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন, বনগাঁ গুডস ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন, বনগাঁ নবট্রাক মালিক সমিতি, বনগাঁ মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, সীমান্ত পরিবহন মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠনসহ আটটি সংগঠন সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দেয়।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর ক্লিয়ারিং এজেন্টরা পেট্রাপোলের বাকি সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠকে বসেছেন। তবে বৈঠকের পর কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা আজই জানিয়ে দেওয়া হবে শুল্ক দফতরকে।

পেট্রাপোল এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ দে বলেন, ‘টানা চার দিনে পড়লো আন্দোলন। পেট্রাপোল বন্দর বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে পড়েছে সীমান্ত বাণিজ্য। আমরা চাই, দ্রুত এর সমাধান করে ফের কাজের গতি আসুক বন্দরে। আজকের বৈঠকের ফল কী হয় তা দেখার জন্যও মুখিয়ে আছে আন্দোলনকারীরা।’

বন্দরের অভ্যন্তরে পণ্যবাহী ট্রাক রাখার জায়গায় চালক ও খালাসিদের ঢুকতে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। কিছু দিন আগেই স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, কোনও ট্রাককে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বন্দরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তারপর থেকেই বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ট্রাকচালক ও খালাসিদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

যদিও আমদানি-রফতানির কাজে জড়িতদের দাবি, করোনার আবহে অনেক গাড়ির কাগজ নবায়ন করা হয়নি। তার মাঝেই হঠাৎ এই নতুন নিয়মের কারণে প্রচুর পণ্যবাহী ট্রাক আটকে যাবে বলেও আশঙ্কা তাদের। তাই তিন মাস গাড়ির কাগজ বৈধ করার সময় চেয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের আরও দাবি, ততদিন পর্যন্ত যেন তাদের ট্রাক আটকানো না হয়। দাবি না মেনে নেওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানান।

পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার শুল্ক দফতরের সঙ্গে কলকাতায় দীর্ঘ সময় ধরে চলা বৈঠকে ক্লিয়ারিং এজেন্টরা তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। তবে কোনও সবুজ সংকেত এখন পর্যন্ত মেলেনি। আমদানি-রফতানি কাজে বন্দর অভ্যন্তরে প্রবেশসহ নানা হয়রানি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, ‘ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে ধর্মঘটের কারণে বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনের মতো বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ রয়েছে। তবে তারা বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল বন্দরে পণ্য খালাস, পণ্য ওঠানামা, শুল্ক ভবনের কাজ ও যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে।’

Source link

Related posts

লকডাউনে চলাচলে লাগবে পুলিশের ‘মুভমেন্ট পাস’

News Desk

কুড়িগ্রামে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, বন্ধ থাকছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

News Desk

পেটের দায়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ

News Desk

Leave a Comment