ভারত গড়িমসি করলে পানির ন্যায্যতা আমাদের আদায় করতে হবে: তারেক রহমান
বাংলাদেশ

ভারত গড়িমসি করলে পানির ন্যায্যতা আমাদের আদায় করতে হবে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘প্রতিবেশী দেশ যদি গড়িমসি করে, কৃষি, নদী, কৃষক বাঁচাতে পানির ন্যায্যতা আদায় করতে হবে। আন্তর্জাতিক ফোরামে তুলে ধরতে হবে। আবার প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা করতে হবে। উত্তরাঞ্চলকে মরুকরণ থেকে বাঁচাতে তিস্তা নদীর পানির কোনও বিকল্প নাই। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। তিস্তার ডান-বামের নদীগুলো খনন করতে হবে। বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য নদী বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে নদীর আশপাশে জলাধার নির্মাণ করতে হবে।’

দুই দিনব্যাপী তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সমাপনি বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে বলেন, ‘স্থায়ী শত্রু আর স্থায়ী বন্ধু বলে কিছু নেই। একটি দেশের সঙ্গে আরেকটি দেশের সম্পর্ক হবে ন্যায্যতার ভিত্তিতে। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়- এটাই আমাদের পররাষ্ট্রনীতি। বর্তমান সময়ে আমাদের সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করা দরকার। নিজ দেশের পাশে কাঁটাতারের বেড়া। সেই বেড়ায় ফেলানির ঝুলন্ত রক্তাক্ত দেহ মানুষ আর দেখতে চায় না।’

তিস্তা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্ব আজ জেনে রাখুক, দেখে রাখুক তিস্তাপাড়ের মানুষ তিস্তার ন্যায্য পানি থেকে বঞ্চিত। উত্তরাঞ্চলসহ ৫৪টি নদীর পানি কারও করুণার বিষয় নয়। অথচ সেই অধিকার আদায়ে আমাদেরকে আজকে আন্দোলন করতে হচ্ছে। ৫০ বছরের ফারাক্কা আর আজকে তিস্তা। আন্তর্জাতিক সব আইন লঙ্ঘন করেছে ভারত। খরায় দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ। অথচ এই অঞ্চলে এক বছরে তিনবার পর্যন্ত বন্যা হয়। হঠাৎ পানি ছাড়ে। দুই দিন আগেও পানি ছেড়ে কৃষকের ঘরবাড়ি ফসলের মাঠ তলিয়ে দিয়েছে।’

উপস্থিত জনসাধারণের উদ্দেশে বলেন, ‘এখানে অনেক মুরব্বি আছেন- তারা জানেন শহীদ জিয়ার খালকাটা কর্মসূচির সময় একটি স্লোগান প্রচলিত ছিল- খাল কাটা হলে সারা, দূর হবনে বন্যা খরা।’

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারে সমালোচনা করে বলেন, ‘সরকারের কোনও হঠকারী সিদ্ধান্তে যেন খুনিরা আর আসতে না পারে। নির্বাচনের কথা শুনলেই অন্তর্বর্তী সরকার বিচলিত হয়। কোনও কোনও উপদেষ্টাদের সঙ্গে কথার কোনও মিল নেই।’

শেখ হাসিনা সরকারের সমালোচনায় বলেন, ‘মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে মাফিয়া সাম্রাজ্য কায়েম করেছিল। ৫ অগাস্ট হাসিনা সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর আবার গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ হয়েছে। হাসিনা একবার বলেছিল ভারতকে যা দিয়েছি, তা সারাজীবন মরে রাখবে। ভারত শুধু এই স্বৈরাচারকে মনে রেখেছে। বাংলাদেশের মানুষের কথা মনে রাখেনি। হাসিনা জোর করে ক্ষমতা দখল করতে নিজেকে ভারতের সেবাদাসীতে পরিণত করেছিল। ন্যায্যতা রক্ষা করা হয়নি।’

নদী রক্ষা লালমনিরহাট বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুল সমন্বয়ে নদী রক্ষা আন্দোলন ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগান দিয়ে তিস্তা নদীর ১১টি পয়েন্টে ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।

এতে বিএনপি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলনসহ যুগপৎ আন্দোলনের শরিকরা অংশগ্রহণ করে। তিস্তা রেল সেতুর নদীচরে করা মূল পয়েন্ট থেকে ১১টি পয়েন্টের কর্মসূচির সমাপনি বক্তব্য দেন তারেক রহমান। অপর দিকে তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের পয়েন্টে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তায় হাঁটু পানিতে প্ল্যাকার্ড পরিদর্শন। তিস্তা রেল সেতু থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত পদযাত্রাসহ ছোট ছোট বেশ কিছু কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শেষ হয় ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ আন্দোলন।

Source link

Related posts

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে: শিক্ষামন্ত্রী

News Desk

কক্সবাজার অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় হামুন

News Desk

৬০ কেজি ওজনের মাছটি বিক্রি হলো ১২ হাজার টাকায়

News Desk

Leave a Comment