ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিতে ডুবে গেছে চট্টগ্রাম নগরীর বেশিরভাগ এলাকা। ডুবেছে সড়ক, অলি-গলি। জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক যানজট। পানি ডুকেছে বাসাবাড়ি, দোকানসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। এতে নগরীর বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর, বাদুরতলা, চকবাজার, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, জিইসি মোড়, পুরাতন চান্দগাঁও থানাসহ নগরীর বেশিরভাগ এলাকা হাঁটু থেকে গলা সমান পানিতে তলিয়ে গেছে। সকাল থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে একাধিক সড়কে। হাজার হাজার যানবাহন সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছে।
বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা নুরুল আবছার জানান, পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় নগরী ডুবে গেছে। বহদ্দারহাট এলাকার মূল সড়ক থেকে শুরু ডুবেছে অলি-গলি। অনেক বাসাবাড়িতেও পানি ডুকেছে। বাসার রান্না ঘরের চুলাও জ্বলছে না।
সরেজমিন মুরাদপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের ওপর যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। সড়কে কোমর থেকে গলা সমান পানি। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া লোকজনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কাউকে কাউকে ভ্যানে মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট যেতে দেখা গেছে। এতে স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে। এদিকে জলাবদ্ধতার অজুহাতে যেসব সড়কে পানি নেই, সেগুলোতেও বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
মুরাদপুর এলাকায় যানজটে আটকে থাকা ট্রাকচালক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সকাল থেকে মুরাদপুরে সড়কের ওপর আটকে আছি। সামনে কোমর থেকে গলা সমান পানি। এত পানিতে গাড়ি নিয়ে সামনে যাওয়া যাচ্ছে না। পানি কমার অপেক্ষায় আছি, কমলে সামনে যাবো।’
এদিকে, চট্টগ্রাম নগরীতে ভারী বৃষ্টিতে বায়েজিদ বোস্তামী থানার টেক্সটাইল জেড আবাসিক এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের দেওয়াল চাপা পড়ে সাইফুল ইসলাম হৃদয় (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। হৃদয় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আবুল হোসেনের ছেলে। থাকতেন নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায়।
চট্টগ্রাম পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা এম এইচ এম মোসাদ্দেক বলেন, ‘রবিবার সকাল ৯টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ২০৫ দশমকি ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। আজ সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ সারা দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে পাহাড় ধসের রয়েছে সম্ভাবনাও।’