গিয়াস উদ্দিন। বেশভূষায় চাকচিক্য। চালচলনে আভিজাত্যের ছাপ। সেজেছিলেন সিআইডি কর্মকর্তা। তারপর ২০১৫ সালে এক মানব পাচারকারিকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন এই গিয়াস উদ্দিন। তারপরের ঘটনা হার মানায় বাংলা সিনেমার কাহিনীকেও। ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মামলায় ২০১৭ সালে তাকে গ্রেপ্তার করা হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তার মামলা প্রত্যাহারের চিঠিও আসে! কিন্তু পরে দেখা যায়, সেটা ভুয়া। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্বাক্ষর ও সিল জাল করে এটা করেছিলেন প্রতারক গিয়াসই! সেই ভয়ঙ্কর প্রতারক গিয়াস উদ্দিনকে আবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২০ এপ্রিল) মধ্যরাতে নগরীর চৌমুহনীস্থ তার ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে মাদক ব্যবসায় জড়িত নাকা রুবেল নামে এক মাদক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে মাদক ক্রয়ের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটে।
ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মাদক ক্রয়ের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু তার কথাবার্তা শুরু থেকেই সন্দেহজনক ছিল। পরে খোঁজখবর ও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা দুপুরে জানতে পারি গিয়াসউদ্দিন ভয়ঙ্কর প্রতারক। তিনি বিভিন্ন পরিচয়ে প্রতারণা করতেন। ২০১৫ সালে ক্রসফায়ার থেকে বাঁচানোর কথা বলে আকবর নামে মানব পাচার মামলার এক আসামির পরিবারের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন এই গিয়াস। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর ২০১৭ সালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি মহসীন আরও বলেন, গিয়াসের বিরুদ্ধে করা সিআইডি পরিচয়ে চাঁদাবাজির মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য ২০১৬ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিলমোহরসহ একটি চিঠি সিআইডি চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আসে। পরে তদন্ত করে দেখা যায় এটিও ভুয়া। এই ঘটনায় খুলশী থানায় গিয়াসকে আসামি করে ২০১৬ সালে আরেকটি মামলা করা হয়। বর্তমানে গিয়াস মাদক ব্যবসায় জড়িত। তার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় ৬টি মামলা রয়েছে। আসামিকে সন্ধ্যার একটু আগে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে বলে জানান ওসি।