Image default
বাংলাদেশ

ভূমি জটিলতায় আটকে আছে শেখ রাসেল স্টেডিয়াম নির্মাণ

রাঙামাটির দুর্গম বরকল উপজেলা কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষা এক পাহাড়ি জনপদ। জেলা সদরের সঙ্গে এই উপজেলার একমাত্র যোগাযোগ নৌপথ। উপজেলার যেদিকে চোখ যায় পাহাড় আর নদী। জমি নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে বন বিভাগের বিরোধের জেরে অনিশ্চয়তার মুখে রয়েছে এই উপজেলার শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ। 

সমতল ভূমির অভাবসহ প্রস্তাবিত জায়গায় বন বিভাগের আপত্তির কারণে এখনও আলোর মুখ দেখেনি স্টেডিয়ামটি। এতে স্থানীয়রা হতাশ। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে জটিলতা নিরসন করে স্টেডিয়ামের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

সরকার ঘোষিত প্রতিটি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম তৈরির কথা থাকলেও, ভূমিসহ নানা জটিলতায় বরকল উপজেলায় আজও তা তৈরি হয়নি। এখনও ভূমিই নির্ধারণ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। মূলত সমতল ভূমির অভাবে এই উপজেলায় স্টেডিয়াম তৈরিতে বেগ পেতে হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে উপজেলার আইমাছড়ির সাক্রাছড়ি গ্রামে একটি জায়গা ঠিক করা হলেও, বন বিভাগের আপত্তিতে থমকে আছে মিনি স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ।

এদিকে, কাঙ্ক্ষিত এই মিনি স্টেডিয়াম তৈরি না হওয়ায় এলাকার ক্রীড়াঙ্গনও মুখ থুবড়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। নতুন খেলোয়াড় যেমন সৃষ্টি হচ্ছে না তেমনি শিক্ষার্থীরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে। ভূমি সমস্যা দ্রুত সমাধন করে শেখ রাসেল স্টেডিয়াম নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয় কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, স্টেডিয়াম না থাকায় বিদ্যালয় ছুটির পর তারা মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের গেম খেলে সময় কাটায়। মাঠ থাকলে খেলাধুলা করে সময় কাটতো। এজন্য স্টেডিয়াম নির্মাণের দাবি তাদের।

স্থানীয় বকুল চাকমা বলেন, শিশুদের পড়ালেখার পাশাপাশি মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলার প্রয়োজন। সাক্রাছড়ি এলাকায় যে স্টেডিয়াম নির্মাণ করার কথা ছিল সেটি যেন দ্রুত হয়। সেজন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমরা দাবি জানাচ্ছি।

আরেক স্থানীয় বাসিন্দা মঙ্গল কুমার চাকমা বলেন, বন বিভাগের কিংবা ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা হলেও সমস্যাটি দ্রুত সমাধান করে স্টেডিয়াম নির্মাণ হোক। শিশুরা মাঠে খেলবে এটাই আমরা চাই। প্রশাসন এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।

বরকল উপজেলার ওরাছড়ি ও সাক্রাছড়ি মৌজার হেডম্যান বিনময় চাকমা বলেন, বন বিভাগ ওই জায়গাটি তাদের দাবি করলেও এটি তাদের না। তাদের জয়গা হলে এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে কীভাবে? এখানে প্রায় ৩০-৩৫ পরিবারের বসবাস দীর্ঘদিনের। বন বিভাগের জায়গায় কীভাবে বসবাস করছে তারা?

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিধান চাকমা বলেন, বরকল উপজেলা পাহাড় ও টিলার উপজেলা। এখানে সমতল ভূমির খুবই অভাব। যে সমতল ভূমি পাওয়া যাচ্ছে সেটিও উপজেলা সদর থেকে অনেক দূরে। সাক্রাছড়ি এলাকাটি উপজেলা সদর থেকে কাছাকাছি। আমরা ওই জায়গা নির্ধারণ করে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠাই। এরপরই কেউ একজন বিষয়টি বন বিভাগের জায়গা বলে অভিযোগ দিয়েছে। বন বিভাগের অথবা কারও ব্যক্তি মালিকানা হলেও তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সামাধান করে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করবো আমরা।

রাঙামাটির দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. রফিকুজ্জামান শাহ বলেন, সাক্রাছড়ির যে জায়গায় স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে, সেকানে সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চল থাকায় অনুমোদন দেওয়া যাচ্ছে না। সংরক্ষিত বনাঞ্চলে কোনও স্থাপনা করতে হলে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তা করতে হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, জায়গাটি আসলে কার সেটা দুই পক্ষের কাগজপত্র দেখে ব্যবস্থা নেবো। এ নিয়ে বন বিভাগের সঙ্গে বসে দ্রুত বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

Source link

Related posts

জাহাঙ্গীর অনুসারী কাউন্সিলরকে দল থেকে অব্যাহতি

News Desk

ঘোড়াঘাটের ইউএনও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি রবিউলের ১৩ বছরের কারাদণ্ড

News Desk

সারা বছর নিষ্ক্রিয়, বর্ষা এলে টনক নড়ে প্রশাসনের

News Desk

Leave a Comment