ভোলার চাঞ্চল্যকর ডাবল মার্ডার মামলায় নিহতদের একজনের বড় ভাইসহ দুজনের মৃত্যুদণ্ড এবং একজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন ভোলা জেলা ও দায়রা জজ মো. মহসিনুল হক। বুধবার (৩০ মার্চ) আদালতে শতাধিক আইনজীবী ও বাদী-বিবাদী পক্ষের লোকের উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ মামলার অপর দুই আসামি মামুনের ছোট ছেলে আরিফ ও স্ত্রী খালেদা আক্তার রেহানাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী জানান, ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আসামি মামুন ও ফিরোজকে ঝুলিয়ে মৃত্যদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়। এ ছাড়া বয়স কম হওয়ায় মামুনের ছেলে শরীফকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। অপর আসামি আরিফ ও রেহানাকে বেকুসর খালাশ দেন আদালত।
স্থানীয় সূত্র এবং মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোহাম্মদ মোস্তফার মৃত্যুর পর পৈত্রিক জমিজমাকে কেন্দ্র করে মামুন এবং তার ছোট ভাই মাসুমের বিরোধ বাঁধে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালের ১৩ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাপ্তা ভোটের ঘর এলাকায় বসতবাড়ির সামনে মামুন ও তার সহযোগী ফিরোজ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে প্রথমে মাসুমকে হত্যা করে। এ সময় সংবাদ পেয়ে মাসুমের শ্যালক জাহিদ এগিয়ে এলে তাকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা মুমূর্ষু জাহিদকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত জাহিদের বাবা এবং অপর নিহত মাসুমের শ্বশুর মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে ভোলা থানায় পাঁচ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এদিকে হত্যাকাণ্ডের পর পরই মামলার প্রধান দুই আসামি মামুন এবং ফিরোজ পালিয়ে যায়। অপর তিন আসামি মামুনের স্ত্রী রেহানা বেগম এবং দুই ছেলে শরীফ ও আরিফকে পুলিশ গ্রেফতার করে। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর মামলার ১ নম্বর আসামি মামুনকে পাবনা জেলা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। কিন্তু দ্বিতীয় আসামি ফিরোজ এখনও পলাতক রয়েছে।
মামলার বাদী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তার ছেলে এবং জামাইকে হত্যা করেছে। তিনি এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।