কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছে দুই গ্রামবাসী। শুক্রবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে স্থানীয় মো. শফিক, সরোয়ার, বেলাল, সুলতান ও পুলিশের কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বেলালের আবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল মোস্তফার ভাই সুলতান আহমদ ভাইয়ের প্রভাব দেখিয়ে অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছিল। এ অবস্থায় মৌলভীপাড়া ও পাহাড়পাড়া গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার বিকালে সুলতান আহমদের সঙ্গে সাইফুল ইসলামের লোকজনের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। হাতাহাতির এক পর্যায়ে সাইফুলকে মারধর করে সুলতান আহমদ। এসময় সাইফুল ইসলামকে বাঁচাতে তার চাচা বেলালসহ অন্যরা এগিয়ে আসে। সুলতান আহামদকে তারা ধাওয়া দেন। এক পর্যায়ে বিপুল সংখ্যক লোকজন নিয়ে আবার ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই সাইফুল ইসলাম ও তার চাচা বেলালকে মারধর করে সুলতান। খবর পেয়ে সাইফুলের পাড়ার লোকজনও এগিয়ে আসে।
এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। ঘটনা এক পর্যায়ে পুরো দুই গ্রামের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। উভয়পক্ষ দা, ছুরি, রড এবং লাঠিসোটাসহ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। এ সময় তিনটি বাড়ি ও দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে টেকনাফ থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। এক পর্যায়ে র্যাব সদস্যরা পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
হোয়াইক্যং ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. যায়েদ হোসেন বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষে বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের সময় দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশের একজন সদস্যও আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, দুই পক্ষের লোকজন জড়ো হয় তখন আমাকে অনেকে ফোন করে বিষয়টি জানান। আমি টেকনাফ মডেল থানাকে অবহিত করি। আমিও ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’পক্ষকে শান্ত করার চেষ্ট চালাই। পরবর্তীতে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
টেকনাফ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল মোস্তফা বলেন, সকালে একটি টমটমের বিষয়ে নিয়ে বাজারে কথা কথাটি হয়। বিকালে এটি সংঘর্ষ পরিণত হয়। আমি উপস্থিত হয়ে ঘটনা শান্ত করার চেষ্টা করেছি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাইসার খসরু বলেন, সংঘর্ষ থামার পরও উভয়পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।