আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ধুম পড়েছে উত্তরের জেলায় নওগাঁর মাঠে মাঠে। নতুন ফসল ঘরে তুলতে কৃষকরা আনন্দে মেতে উঠেছেন। অবারিত প্রান্তরে বিস্তৃত ফসলের মাঠে সোনালি ধানের সমারোহ। বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। চারিদিকে নতুন আমন ধানের ঘ্রাণ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় এক লাখ ৯৬ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। যা থেকে ৯ লাখ ৭ হাজার ৫২৫ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের আশা কৃষি বিভাগের।
কৃষকরা বলছেন, বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। নতুন ধান কাটা আর সেই ধানের প্রথম অন্ন খাওয়া এ যেন এক অন্যরকম উৎসব। নতুন চালের তৈরি পায়েশ-পোলাও, পিঠা-পুলিসহ রকমারি খাদ্য পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজনকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়াবেন তারা।
নওগাঁ সদরের বর্ষাইল গ্রামের চাষি ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর ধানের ফলন ভালো হয়েছে। প্রতি বিঘাতে ধান উৎপাদন করতে খরচ পড়েছে ১০-১২ হাজার টাকা। এ ফসল কাটার পর অন্য ফসল উৎপাদনে বাড়তি তেমন খরচ হয় না। আবহাওয়া ভালো থাকায় এখন ভালোভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারছেন কৃষক।’
সদর উপজেলার কীর্তিপুর গ্রামের কৃষক এনামুল হক বলেন, ‘আপদকালীন ফসল হিসেবে আমন ধানের আবাদ করা হয়। এ ধান কেটে আলু বা সরিষা রোপণ করা হবে। আমন ধান বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে এসব ফসলের আবাদ করা হবে। এতে পকেট থেকে বাড়তি টাকা খরচ হবে না।’
রাণীনগর উপজেলার কালিগ্রামের কৃষক সুলতান হোসেন বলেন, ‘আমনের আবাদে বিঘাপ্রতি প্রায় ১২ হাজার টাকা খরচ পড়েছে। মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় গভীর নলকূপের পানি দিয়ে আবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু পরে বৃষ্টি হওয়াতে ধানের কিছুটা সমস্যা হয়েছে। ধানে পোকার আক্রমণ হয়েছে। এ কারণে কীটনাশক প্রয়োগে বাড়তি টাকা খরচ হয়েছে। তারপরও ফলন হয়েছে বিঘাপ্রতি ১৬-১৭ মণ।’
নওগাঁ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সদর উপজেলায় ১০ হাজার ৪৯৫ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চেয়ে বেশি হয়েছে।’ তবে ধানে পোকার আক্রমণ হলেও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় কোনও প্রভাব ফেলবে না বলে তিনি জানান।