Image default
বাংলাদেশ

মাধবপুরে আটকে রেখে নারীকে রাতভর ‘ধর্ষণ’

হবিগঞ্জের মাধবপুরের কমলপুরে কবিরাজের বাড়িতে নেওয়ার কথা বলে আটকে রেখে এক নারীকে রাতভর ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে দুই সিএনজি অটোরিকশা চালকের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগে গতকাল শুক্রবার এক চালককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত সিএনজি অটোরিকশা চালক হলেন, মাধবপুর উপজেলার ২ নং চৌমুহনী ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ডের কমলপুর গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে মাসুক মিয়া (৩৫)। আরেক অভিযুক্ত আমির আলীর পুত্র সাখাওয়াত হোসেন রুবেল (৩২)।

পুলিশ ও স্থানীয় মেম্বার আমজাদ মাসুক জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় (২৫ মে) মাধবপুর সেমকো গ্যাস পাম্প এলাকা থেকে সিএনজি চালক মাসুক মিয়া তার সিএনজিতে সিমা (ছদ্মনাম) কে জগদীশপুর চারাভাঙ্গা কবিরাজের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে সিএনজিতে তুলে। পরে সিমা (ছদ্মনাম) তাদের জানায় তার বাবার বাড়ি নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর গ্রামে। সিএনজি চালক মাসুক মিয়া সিমা (ছদ্মনাম) কে জানায় কবিরাজ সে চিনে ও তার খুবই পরিচিত। এই শুনে সাথী মাসুক মিয়ার গাড়িতে উঠে বসে এবং বলে থাকে কবিরাজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

সিএনজি চালক মাসুক মিয়া কিছু পথ যাওয়ার পর মাসুক মিয়া ঐ নারীকে জানায়, কবিরাজের এক কাছের লোক তার খুব পরিচিত তার সাথে ফোন করে কবিরাজের খবর নিচ্ছে। সিএনজি চালক মাসুক মিয়া ফোন করে খবর নিয়ে ঐ নারীকে জানায় কবিরাজ বাড়ীতে নাই। এই বলে ঐ নারীকে আগামীকাল বুধবার (২৬ মে) কবিরাজ বাড়িতে থাকবে । সিএনজি চালক মাসুক ঐ নারীকে ধর্মের বোন ডাকে তখন। সিএনজি চালক মাসুক মিয়া ঐ নারীকে বলে বোন তুমি আজ বাসায় গিয়ে কি করবা বোন তুমি আমাদের বাড়িতে আজ বেড়াইয়াবা কাল সকালে কবিরাজ দেখাইয়া তোমাকে বাড়িতে পৌঁছে দিব। কথিত ধর্মবোন সিমা (ছদ্মনাম) কে সিএনজি মাসুক মিয়া তার বাড়ি চৌমুহনী ইউনিয়নের কমলপুর যাওয়ার পথে মৌজপুর নামক স্থানে গাড়ি দারকরা মাত্রই একজন গাড়িতে উঠে তার নাম সাখাওয়াত হোসেন রুবেল । তার পর রাত্রি সাড়ে ৯ টার দিকে কমলপুর গিয়ে পৌঁছালে সিএনজি চালক মাসুক মিয়া ও তার সঙ্গী রুবেল মিলে সিমা আক্তার (ছদ্মনাম) কে সিএনজি চালক মাসুক মিয়ার বাড়িতে না নিয়ে জনৈক কেরামত আলীর বাড়িতে কেরামত আলীর বৃদ্ধ মা ও বউকে সিএনজি চালক মাসুক মিয়া ঐ নারীকে তার মেহমান বলে জানায়।

পরে সিএনজি চালক মাসুক মিয়া তার সঙ্গে থাকা নারীকে তার ধর্মের বোন পরিচয়ে ঐ নারীকে কমলপুর গ্রামে জনৈক কেরামত আলীর বাড়িতে রাত্রিযাপনের অনুমতি নেয়। সকালে ধর্মীয় বোনকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাবে বলে কেরামতের বাড়িতে রেখে আসে সিএনজি চালক মাসুক মিয়া। রাত্রি ১১টার সময় মাসুক মিয়া ও সাখাওয়াত হোসেন রুবেল দুই জন মিলে কেরামত এর বাড়িতে গিয়ে সীমাকে ডেকে ঘর থেকে সীমা বাহিরে বেড় করেন সাথী বেড় হলে দুই জনে মিলে সীমাকে হাত ও মুখ বেধে কেরামতের বাড়ির দক্ষিণ পাশে গাছের বাগানে নিয়ে গিয়ে সারারাত দুইজনে ধর্ষণ করে। বুধবার (২৬ মে) সকাল ৫টার দিককে সিমা (ছদ্মনাম) চিৎকার শুনতে পায় দোকানে থাকা লোকজন। চিৎকার এর শব্দ শুনে লোকজন গিয়ে দেখে গাছের বাগানে সিমা আক্তার (ছদ্মনাম) নামে এক নারী। ঐ নারী স্থানীয় লোকদের জানায় হাত ও মুখ বেঁধে সিএনজি চালক মাসুক মিয়া ও সাখাওয়াত হোসেন রুবেল এই দুইজন মিলে ধর্ষণ করেছে। পরে এলাকার লোকজন মাসুক মিয়াকে খবর দিয়ে দোকানে আনে এবং মাসুক মিয়া প্রাথমিক ভাবে সব কিছু শিকার করে। পরে এলাকা বাসি সবাই সিদ্ধান্ত করে পুলিশের কাছে সিএন জি চালক মাসুক ও সাথী আক্তারকে তুলে দেয়।

এ ব্যাপারে কাশিমনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উত্তম কুমার দাসের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় মেম্বারসহ এলাকার লোকজন ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার ও ধর্ষণকারীকে আটক করে আমাদেরকে ফোনে জানান ধর্ষণ হওয়া খবর শুনে এস আই বাবুল চৌধুরীকে পাঠালে। এস আই বাবুল চৌধুরী তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গিয়ে ভুক্তভোগী, এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধির কথা শুনে মাসুক মিয়া ঐ নারীকে নিয়ে আসে। অপর আসামী সাখাওয়াত হোসেন রুবেলকে পাওয়া যায়নি সে পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে মাধবপুর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। শুক্রবার বিকেলে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (৬) গ্রেপ্তারকৃত সিএনজি চালক মাসুক মিয়াকে প্রেরণ করা হলে সে আদালতে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠায় আদালত।

সূত্র :সিলেটটুডে ২৪

Related posts

কাপ্তাই হ্রদে ৮ ঘণ্টায় ধরা পড়েছে ৪০ হাজার কেজি মাছ

News Desk

পটুয়াখালীতে প্রস্তুত ১৭৭ আশ্রয়কেন্দ্র, সতর্ক থাকতে মাইকিং

News Desk

করোনা নিয়ে কাদেরের কবিতা

News Desk

Leave a Comment