‘মানুষ আল্লাহর কাছে টাকা-গাড়ি চায়, আমি চারটে দাড়ি চেয়েছিলাম’
বাংলাদেশ

‘মানুষ আল্লাহর কাছে টাকা-গাড়ি চায়, আমি চারটে দাড়ি চেয়েছিলাম’

শখের বসে মানুষ কত কিছুই না করেন। শখ পূরণ করতে অনেকে নানান ত্যাগ স্বীকার করতেও পিছপা হন না। এমনই এক সৌখিন মানুষের দেখা মিলেছে কুষ্টিয়ায়। মাহতাব উদ্দিন লাদেন নামে সত্তরোর্ধ্ব এই ব্যক্তি শুধু শখের বসে একটানা ২০ বছর ধরে রেখেছেন দীর্ঘ এক সুদিঘল দাড়ি। অনেকটা অবাক করার মতো বিষয় হলেও সত্য এই ব্যক্তির উচ্চতা ৫ ফিট ৯ ইঞ্চি হলেও বর্তমানে তার দাড়ির দৈর্ঘ্য প্রায় ৬ ফিট ১০ ইঞ্চি।

মাহতাব উদ্দিন লাদেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের পাককোলা গ্রামের মৃত হারেজ মণ্ডলের ছেলে। বর্তমানে তার মুখের দাড়ির দৈর্ঘ্য প্রায় ৬ ফুট ১০ ইঞ্চি। লাদেন ২০ বছরে মাত্র চার হাত দাড়ি কেটেছেন। তিনি দাড়ির যত্ন নেন প্রতিদিন। দাড়ি শুকানোর বিড়ম্বনার কারণে তিনি একবছরে সব মিলিয়ে ১২ বারেরও কম গোসল করেন। এতো বড় দাড়ি যে পেঁচিয়ে মুখে খোঁপা করে রাখেন। অনেকেই প্রথমবার এতো বড় দাড়ি দেখে হতবাক হয়ে যান।

জানা গেছে, মাহতাব উদ্দিন লাদেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের পাককোলা গ্রামের মৃত হারেজ মণ্ডলের ছেলে। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক মাহতাব উদ্দিন। আগে কুষ্টিয়ার একটি প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মার্কেটিং বিভাগে কাজ করলেও বর্তমানে তিনি নিজ গ্রামে চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। 

কথা হয় লাদেনের সঙ্গে। এ সময় তিনি বলেন, ২০০৩ সাল থেকে এমন দাড়ি রাখা শুরু করেছি। বাপ-দাদাদের নাভি পর্যন্ত দাড়ি ছিল। তাই আল্লাহর কাছে চেয়েছিলাম আমার দাড়িটা নাভির নিচে দিও। আল্লাহ আমার কথা রেখেছেন। দাড়ি বড় হতে হতে এই ২০ বছরে চারবার চার হাত দাড়ি কেটেছি। আল্লাহর কাছে আরজি আছে এই দাড়ি নিয়ে যেন আমি কবর পর্যন্ত যেতে পারি। 

এমন দীর্ঘ দাড়ি রাখতে অসুবিধা হয় কিনা- জবাবে লাদেন বলেন, দাড়ি রাখতে আমার কোনও অসুবিধা হয় না।

যত্নের বিষয়ে বলেন, আমি গোসল করি একটু পাতলা। বারো মাসে বছর হয় কিন্তু বছরে বারবার গোসল হয় আবার হয় না এমন। আমার পরিবারের স্ত্রী আছেন তিনি দাড়ির যত্ন নেওয়ার বিষয়ে যথেষ্ট সহযোগিতা করেন।

লাদেন বলেন, দাড়ি নিয়ে অনেকে অনেক মন্তব্য করেন। কেউ ভালো বলেন, কেউ খারাপ বলেন। কেউ কেউ দাড়ি রাখা সম্পর্কে বলেন আইন নাই, হাদিস নাই, দলিল নাই। মানুষ আল্লাহর কাছে টাকা চায়, গাড়ি চায়, বাড়ি চাই। আমি চারটে দাড়ি চেয়েছিলাম। আল্লাহ দিয়েছেন।

তিনি জানান, আমি দেশের আনাচে-কানাচে যেখানেই যাই এমন দাড়ি পাওয়া যায় নাই।

লাদেন দাবি করেন, এশিয়া মহাদেশের মধ্যেও সবচেয়ে বড় দাড়ি তার। তবে দাড়ি রাখার জন্য কোনও রেকর্ড বুকে নাম লেখাতে চান না তিনি।

লাদের নামকরণ সম্পর্কে মাহতাব উদ্দিন বলেন, আমার নাম ছিল মাহতাব উদ্দিন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমাদের এলাকায় একটা ব্রিজের অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু পরে কাজ শুরু হয় বিএনপি সরকারের সময়ে। তখন তৎকালীন বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন আহসানুল হক পচা মোল্লা। সেই সময় এই সংসদ সদস্য ব্রিজটি আমাদের এলাকায় না দিয়ে অন্য এলাকায় দেওয়ার পাঁয়তারা করেন। তখন আমি এর প্রতিবাদ করি। সেই সময় আমার সাহসিকতা দেখে পচা মোল্লা লাদেন নাম দেন। বর্তমানে আমার জাতীয় পরিচয় পত্রেও লাদেন নামটি রয়েছে।

স্থানীয় পাককোলা গ্রামের রকি ইসলাম জানান, মাহতাব উদ্দিন লাদেন খুবই সৌখিন একজন মানুষ। তিনি গ্রামে সবজিসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করেন। চাষাবাদের পর যতটুকু সময় পান তিনি দাড়ি পরিচর্যা করেন। তার উচ্চতার চেয়ে দাড়ির দৈর্ঘ্য বেশি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এমন বড় দাড়ি রেখেছেন।

Source link

Related posts

বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

News Desk

গ্রামে বাড়ি করতেও দিতে হবে কর

News Desk

ব্রহ্মপুত্রে অপরিবর্তিত, ধরলা-দুধকুমার অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

News Desk

Leave a Comment