মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলে আওয়ামী লীগের এক পক্ষের হামলায় প্রতিপক্ষের নয়জন আহত হয়েছেন। আজ শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের আমতলী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিরা সবাই সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার উদ্দিন ভূঁইয়ার অনুসারী।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আক্তারুজ্জামান জীবনের অনুসারী চরকেওয়ার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মোক্তার হোসেন গাজী ও ইউনিয়ন যুবলীগের বর্তমান সভাপতি সুলতান কাজী ওরফে বাবুর নেতৃত্বে এ হামলা করা হয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেছেন।
আহত ব্যক্তিরা হলেন শাহাদাৎ হোসেন মুন্সী (৪০), আল-আমিন (২৭), মো. আয়নাল (৩০), মো. জলিল ফকির (৪৮), মো. মিনহাজ (৩৫), আমির হোসেন (৩০), সাইফুল ইসলাম (৩৭), সুজন মিয়া (৩০) ও নূর মুন্সী (৪০)। তাঁদের মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার উদ্দিন ভূঁইয়া ও সহসভাপতি আক্তারুজ্জামানের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এ দ্বন্দ্ব তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। পুরো ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। বিভিন্ন সময় পক্ষ দুটির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচির বিরুদ্ধে শহরে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ হয়। সেখানে বিরোধী দুই পক্ষের লোকজন অংশ নেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। এর জেরে সন্ধ্যায় মোক্তার গাজী ও সুলতান কাজীর কর্মীরা আফসার উদ্দিন ভূঁইয়ার কর্মীদের মারধর করেন।
আফসার উদ্দিন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে আক্তারুজ্জামানের অনুসারী মোক্তার গাজী ও সুলতান কাজী এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে আসছেন। আমার পক্ষে যাঁরা নির্বাচন করেছিলেন, তাঁদের মারধর করেন। আজ শহরে শান্তি সমাবেশ শেষে আমাদের লোকজন গ্রামে ফিরছিলেন। তখন পূর্বপরিকল্পিতভাবে মোক্তার গাজী ও সুলতান কাজীরা আমতলী গ্রামে হামলা চালিয়ে আমাদের লোকজনকে পিটিয়ে আহত করেছেন। গ্রামের লোকজনকে মারধর করে এলাকাছাড়া করেছেন।’
অভিযোগের বিষয়ে সুলতান কাজী বলেন, ‘আজ মুন্সিগঞ্জ শহরে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ছিল। সেখানে আফসার উদ্দিন ভূঁইয়ার লোকজন উত্তেজনা সৃষ্টি করেন। আমাদের পক্ষের একজনকে মুন্সিরহাট এলাকায় মারধর করেন। সন্ধ্যায় আমরা আমতলী এলাকায় চা খাচ্ছিলাম। তখন আফসার উদ্দিন ভূঁইয়ার লোকজন ঘটনাস্থলে এসে আমাদের সঙ্গে আবারও তর্কে জড়ান। সে সময় উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়।’
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তারিকুজ্জামান জানান, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। রাত ১০টা পর্যন্ত কোনো পক্ষের লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।