কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী এসভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পাস করা ২২ কৃতী শিক্ষার্থী এবার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় পাস করে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন এসব শিক্ষার্থী। আর এ সাফল্যে আনন্দের সীমা নেই এসভি’র দেশসেরা সেই প্রধান শিক্ষক শাহনাজ কবীরসহ অন্য শিক্ষকদের।
জানা গেছে, এসভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালের এসএসসি ব্যাচের অন্তত ২২ মেধাবী ছাত্রী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
তারা হলেন- নোসাইবা হোসেন সাবা, সুলতানা আক্তার সাদিয়া, আরফাতুন নাহার সুমাইয়া, নওশীন তাবাসসুম ইসলাম, নিশাত নাবিলা, সাদিয়া হক, সিনথিয়া বিনতে মান্নান, অমৃতি অরাত্রিকা, নিভৃতি দ্যোতনা, সায়মা আক্তার, শেফা উম্মে সালমা সুস্মিতা, তাজরিয়ান রাফিন মাহি, ফারহানা আক্তার বাঁধন, আসমা সিদ্দিকা অংকন, নূসরাত আরা নিদ্রা, উম্মে হাবিবা অন্তু, অনন্যা সাহা, আনিকা তাসনিম অনি, রেজওয়ানা আফরিন ইকরা, নওশীন তাবাসসুম মৌনতা, তাসফিয়া নওশীন এবং আনজুমান আরা শাম্মী।
তাদের মধ্যে ঢাকার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন নোসাইবা হোসেন সাবা, সুলতানা আক্তার সাদিয়া, আরফাতুন নাহার সুমাইয়া ও তাসফিয়া নওশীন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন নিশাত নাবিলা ও সাদিয়া হক। কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন নওশীন তাবাসসুম ইসলাম।
সিনথিয়া বিনতে মান্নান, অমৃতি অরাত্রিকা ও রেজওয়ানা আফরিন ইকরা সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। বগুড়া মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন নিভৃতি দ্যোতনা। খুলনা মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন সায়মা আক্তার ও নওশীন তাবাসসুম মৌনতা।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন শেফা উম্মে সালমা সুস্মিতা, ফারহানা আক্তার বাঁধন ও আনিকা তাসনিম অনি। রংপুর মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছেন তাজরিয়ান রাফিন মাহি, অনন্যা সাহা ও আনজুমান আরা শাম্মী। আসমা সিদ্দিকা অংকন ও নূসরাত আরা নিদ্রা বরিশালের শের-ই বাংলা একে ফজলুল হক মেডিকেল কলেজ এবং উম্মে হাবিবা অন্তু নোয়াখালী মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন।
মেয়েদের এমন সাফল্যে আনন্দে উদ্বেলিত কিশোরগঞ্জ এসভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ কবীর। বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি মেয়েদের এমনভাবে গঠন করতে যাতে এখান থেকে বের হওয়ার পর তারা নিজেদের কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ করতে পারে। তাদের এই অর্জনে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। শিক্ষক হিসেবে আমরা গর্বিত।’
তিনি জানান, মেডিকেল পরীক্ষার রেজাল্ট হওয়ার পর মেয়েরা ফোন করে যে তথ্য দিয়েছে, সে অনুযায়ী ২২ জন বিভিন্ন মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এ সংখ্যা কিছুটা বেশি হতে পারে। মেডিকেল ছাড়াও দেশের নামি-দামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাফল্যের সাথে ভর্তির সুযোগ পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বরাবরই এসএসসি পরীক্ষায় ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করে আসছে। প্রতি বছর শতভাগ পাস ছাড়াও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে জেলায় শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে। ২০১৮ সালে এসভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া ২৩৩ জন শিক্ষার্থীর ১৯৩ জন-ই জিপিএ ৫ পেয়েছিল।
এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ কবীর ২০১৯ সালে দেশের সেরা প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন। এছাড়া গতমাসে শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদার রাখায় পেয়েছেন প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা।
তথ্য সূত্রঃ সময় টিভি