যমুনায় বাড়ছে পানি, ভাঙন আতঙ্কে সিরাজগঞ্জবাসী 
বাংলাদেশ

যমুনায় বাড়ছে পানি, ভাঙন আতঙ্কে সিরাজগঞ্জবাসী 

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমা আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এর প্রভাব পড়েছে যমুনায়। সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ৩৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে পানি বাড়তে থাকায় ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দারা।
 
শুক্রবার (১৭ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন ও সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক হাসানুর রহমান।

এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে ধীরে ধীরে প্লাবিত হচ্ছে যমুনার চর ও নিম্নাঞ্চল। এ অবস্থায় চরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে বন্যা ও ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ সব এলাকায় পানিতে ডুবে নষ্ট হচ্ছে নানা রকমের ফসল।  

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক হাসানুর রহমান বলেন, শহরের হার্ড পয়েন্ট এলাকায় পানি রেকর্ড হয়েছে ১২ দশমিক ৮৯ মিটার। আর এখানে বিপৎসীমা ধরা হয় ১৩ দশমিক ৩৫ মিটার। আর গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৩৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে যমুনায় আরও কয়েকদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের নিচু জমিগুলো তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। যমুনার পাশাপাশি ফুলজোড়, করতোয়া, বড়াল, হুড়াসগর, ইছামতীসহ চলনবিলের পানিও বাড়ছে। এতে নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল ডুবে গেছে। এরই মধ্যে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি প্লাবিত হওয়ায় কাঁচা পাট, তিল, কাউন, বাদাম, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের উঠতি ফসল নষ্ট হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা।

অপরদিকে, যমুনার পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার কাজিপুর, চৌহালী, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরের চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ওই এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন বলেন, সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধ এলাকসহ সব এলাকাতেই যমুনা নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে আজ (শুক্রবার) যমুনার পানি বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে পানি বাড়লে দু-এক দিনের মধ্যেই বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

 ভাঙনের বিষয়ে তিনি বলেন, যমুনায় পানি বাড়া বা কমার সঙ্গে সঙ্গে অনেক জায়গায় নতুন করে ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙন কবলিত এলাকায় আমাদের হাতে থাকা ৩০ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এছাড়াও আগামী সপ্তাহে আমাদের হাতে আরও ৯৬ হাজার জিও ব্যাগ এসে পৌঁছাবে। সেগুলোও খুব দ্রুতই ফেলা শুরু হবে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এভাবে পানি বাড়লে নদীর তীরবর্তী এলাকায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যমুনায় যেভাবে পানি বাড়ছে এভাবে চলতে থাকলে আগামী দু-একদিনের মধ্যেই বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে ভাঙনসহ যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তুত আছে বলে জানান তিনি।

 

Source link

Related posts

নোয়াখালীতে করোনায় দুই দিনে ৬ জনের মৃত্যু

News Desk

আওয়ামী লীগ ও ভাসানীর প্রিয় ‘মজিবর’

News Desk

প্রটোকল ভেঙে মোটরসাইকেলে করে সমাবেশে তথ্যমন্ত্রী

News Desk

Leave a Comment