যশোরে দিনভর বৃষ্টি, শহরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
বাংলাদেশ

যশোরে দিনভর বৃষ্টি, শহরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন শরিফুল ইসলাম (৫৫)। দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ আয় হয়েছে একশ টাকারও কম। মহাজনকে দিতে হবে আড়াইশ টাকা। কিন্তু, রাস্তায় লোকজনের চলাচল খুবই কম। শুক্রবার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হয় যশোরে। শনিবারও একইভাবে ঝরেছে বৃষ্টি। তবে, আজ ভোর থেকেই ঝরছে অঝোর ধারায়।

রবিবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত যশোরে রেকর্ড করা হয়েছে ৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টি। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে যশোর বিমানবন্দর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ঘাঁটির আবহাওয়া অফিস এই তথ্য জানিয়েছে।

আবহাওয়া অফিসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, রবিবার সারাদিন বৃষ্টিপাত চলবে। সন্ধ্যার পরে একটু ধরে আসতে পারে। বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, বিরামহীন বৃষ্টিতে যশোর শহরের কয়েকটি নিচু এলাকা ডুবে গেছে। ওইসব এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। টানা বর্ষণে দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয় ও জলাবদ্ধ এলাকার মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার ১৪০ হেক্টর জমির আগাম শীতকালীন সবজির ক্ষেত।

শহরের বেজপাড়া চোপদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা জিল্লুর রহমান জানান, তাদের এলাকাসহ ষষ্টীতলা, টিবি ক্লিনিক এলাকা, চার খাম্বা মোড়, ভোলা ট্যাংক রোড, খড়কী, শংকরপুর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া শহরের স্টেডিয়ামপাড়া, মিশনপাড়া, উপশহর, চাঁচড়া, কারবালা, এমএম কলেজ এলাকা, নাজিরশংকরপুর, বকচর, আবরপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকাও বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে।

যশোর সদরের আব্দুলপুর গ্রামের সবজি চাষি আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এলাকার মূলা, পটল, বাঁধাকপিসহ বীজতলা তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির কারণে কৃষি কর্মকর্তারা এখন গ্রামে অবস্থান করছেন।’

চূড়ামনকাটি ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তরুণ বিশ্বাস বলেন, ‘বৃষ্টি যদি আজকালের মধ্যে শেষ হয়, তবে এখানকার পানি নেমে যাবে। মাঠে এখন আউশ ও আমন ধান রয়েছে। এ ছাড়া মুলা, পটল, লাউ, বাঁধাকপি ইত্যাদি রয়েছে। এ ছাড়া নতুন বীজতলাও পানিতে নিমজ্জিত। যদি বৃষ্টি তিন-চার দিন ধরে হয়, তাহলে বীজতলার ২০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যাবে।’

বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে যোগাযোগ করা হলে যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার জানান, শনিবার থেকে শুরু হওয়া ভারি বর্ষণে জেলার ১৪০ হেক্টর সবজির ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এসব ক্ষেতে কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজি, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, পালংশাক চাষাবাদ করেছিলেন।

তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত শতকরা ২৫ ভাগ কৃষিজমি ভারি বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

Source link

Related posts

করোনা মোকাবিলায় সহযোগিতা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

News Desk

‘শুধু চাল দিয়ে পেট ভরে না, সঙ্গে অন্য কিছুও লাগে’

News Desk

তিনগুণ ভাড়া দিয়ে ঈদে বাড়ি যাচ্ছে মানুষ

News Desk

Leave a Comment