সপ্তম ধাপের নির্বাচনে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ১৭ ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) চেয়ারম্যান পদে ১৪টিতে পরাজিত হয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা। ওই ১৪ ইউনিয়নের তিনটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী, সাতটিতে জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং চারটিতে অন্যান্য স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে রিটার্নিং অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকী বেসরকারিভাবে এ ফল ঘোষণা করেন।
বিজয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা হলেন– মিলনপুর ইউনিয়নের আতিয়ার রহমান, সদর দুর্গাপুরের সহিদুর রহমান তালুকদার, বড়হজরতপুরের মতিন মিয়া।
স্বতন্ত্র বিদ্রোহী প্রার্থীরা হলেন–খোড়াগাছ ইউনিয়নের আসাদুজ্জামান, লতিফপুরের ইদ্রিস আলী মণ্ডল, চেংমারীর রেজাউল কবীর টুটুল।
স্বতন্ত্র জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা হলেন– পায়রাবন্দে মাহবুবার রহমান, ভাগ্নিতে আব্দুল্লা আল মাহমুদ, বালারহাটে হাজি রতন, কাফ্রিখালে জয়নাল মাস্টার, বালুয়া মাসিমপুরে শাহাজাহান, মির্জাপুরে শফিকুল ইসলাম ও ইমাদপুরে শফিকুল হক।
বাকি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলেন– ময়েনপুরে মুকুল মিয়া, বড় বালায়ে তরিকুল ইসলাম, শাল্টি গোপালপুরে হারুনর রশীদ, রানীপুকুরে ফরহাদ হোসেন।
মিঠাপুকুর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ৪ লাখ ১৮ হাজার ১৪১ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৭ হাজার ৯২৮ জন এবং নারী ২ লাখ ১১ হাজার ১৩ জন। চেয়ারম্যান পদে ১৩১ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৭৩৮ জন এবং সংরক্ষিত সদস্য পদে ২৮৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের পরাজয়ের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়ে দলীয় প্রার্থীকে পরাজিত করার নকশা তৈরি করা হয়েছে। সংসদ সদস্যের লাইনের যারা দলীয় প্রার্থী হতে পারেননি তারা দলের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করেননি বরং জামায়াত ও বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে কেন্দ্র আর জেলা অনুমোদিত ইউনিয়ন কমিটির বাইরে সংসদ সদস্য মনোনীত পাল্টাপাল্টি কমিটি কাজ করছে, চেইন অব কমান্ড নেই। কমিটি বিলুপ্তি হওয়ার পরেও জেলার কয়েকজন নেতাকে নিয়ে বিলুপ্ত কমিটি বর্ধিত সভা করে এ ব্যাপারে কেন্দ্রে লিখিতভাবে জানিয়েছে।’ আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছে আওয়ামী লীগের কারণেই বলে তিনি মনে করেন।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচনে সংসদ সদস্য (এমপি) আশিকুর রহমান ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নেওয়ায় তাদের নির্দেশে এবং উপজেলা চেয়ারম্যান আলাদা আলাদাভাবে দুই-তিন জনকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য, বিদ্রোহী প্রার্থীরা জামায়াত প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করেছেন। জেলা আওয়ামী লীগ থেকে আমরা কোনও পদক্ষেপ নিতে পারিনি।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় আছে। উপজেলায় ১৭টি কলেজে অনেক প্রভাষক নিয়োগ হয়েছে। কিন্তু দলের কাউকে নিয়োগ না দিয়ে অর্থের বিনিময়ে জামায়াত-বিএনপির লোকদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। তারাই নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার হয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে।’