রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, তারাগঞ্জ ও মিঠাপুকুর উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে প্রায় দুই হাজার ঘরবাড়ি বিধস্ত হয়েছে। উপড়ে পড়েছে কয়েকশ’ গাছপালা। সেই সঙ্গে শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৩৫ জন।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) রাত থেকে থেমে থেমে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি আঘাত হানে। এতে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে তার ছিড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৭৫ কিলোমিটার। বৃষ্টি হয়েছে সাত মিলিমিটার।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান বলেন, ঝড়ে অনেক ঘরবাড়ি বিধস্ত হয়েছে। গাছপালা উপড়ে গেছে। তবে শিলাবৃষ্টিতে ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি।
জেলা ত্রাণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত ৯টা ও মধ্যরাত ৩টার দিকে দুই দফায় কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে। এতে চার উপজেলার ৩০টি গ্রামের প্রায় দুই হাজার ঘরবাড়ি বিধস্ত হয়। অনেক আধাপাকা টিনের ঘরবাড়িও বিধস্ত হয়েছে। ঘরচাপা পড়ে ১০ শিশুসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রাম। এগুলো হলো—তালপট্টি, হাজিপাড়া, নরসিং হাজিপাড়া, কিশামত পাড়া ও মর্নেয়ার চর। ঘর বিধ্বস্ত হওয়ায় শত শত পরিবার খোলা আকাশের নিচে মালামাল সরিয়ে নিয়েছে।
হাজিপাড়া গ্রামের আমিনা বেওয়া, সালাম ও আবেদা বেগম জানান, তাদের দুটি করে টিনের চালা উড়ে গেছে।
তালপট্টি গ্রামের সাহাবুল ও মোনা মিয়া জানান, তালপট্টি গ্রামের বেশিরভাগ ঘরবাড়ি বিধস্ত হয়েছে। শত শত গাছপালা উপড়ে গেছে।
এদিকে মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট, জায়গীরহাট,বলদীপুকুর ও মিলনপুর গ্রামের অন্তত দুই শতাধিক বাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। তারাগঞ্জ ও কাউনিয়া উপজেলাতেও কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হেনেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এক কর্মকর্তা জানান, ঝড়ে বিভিন্ন স্থানের বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে তার ছিড়ে যায়। এতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এসব সংস্কার করে বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক করতে দুই দিন সময় লেগে যেতে পারে।