হরতালে নাশকতা ও ককটেলসহ বোমা রাখার অভিযোগে করা মামলায় রংপুর বিএনপির পাঁচ নেতাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক কৃষ্ণকান্ত রায় এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মাহফুজুন্নবী ডন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকু, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জহির আলম নয়ন, যুবদল নেতা তারিক হোসেন সোহাগ ও আরিফ মিয়া।
রায় ঘোষণার সময় কারাগারে থাকা বিএনপি নেতা ডনকে আদালতে হাজির করা হলেও বাকি চার আসামি পলাতক ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৯ মে রাত সাড়ে ১০টার দিকে রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভেতরে পুকুর পাড়ে পর দিন ২০ মে ডাকা হরতালে নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশে সমবেত হন বিএনপির নেতাকর্মীরা। পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে সাত বিএনপি ও যুবদল নেতাকে আটক করে। সেখান থেকে ৫৬টি চকলেট বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানার এসআই চন্দন কুমার চক্রবর্তী বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ সাত আসামির নামে আদালতে চার্জশিট দেয়। মামলার বিচার চলাকালে দুই আসামি রইছ আহামেদ ও ঝন্টু মারা যান। মামলায় ১৩ সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আব্দুস সাত্তার জানান, তারা ন্যায় বিচার পেয়েছেন। এ রায়ে তারা সন্তোষ প্রকাশ করছেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আফতাব হোসেন বলেন, এটা ফরমায়েশি রায়। এই মামলায় দুজন নিরপেক্ষ সাক্ষী ছিলেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের দুই কর্মচারী। তারা আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে বলেছে, তাদের ঘুম থেকে তুলে পুলিশ তাদের সিজার লিস্টে স্বাক্ষর নিয়েছে। তারা কোনও বোমা দেখেনি। পুলিশ দেখায়ওনি। শুধু তাই নয়, ওই রাতে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কাউকে আসতেও তারা দেখেনি।
তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে মামলার বেশির ভাগ সাক্ষী পুলিশ সদস্য। তারাও আদালতে একেকজন একেক ধরনের সাক্ষ্য দিয়েছে। এই মামলায় আসামিদের সাজা দেওয়ার মতো কোনও ইনগিরেন্ট পুলিশ প্রমাণ করতে পারেনি। ফলে একটি সাজানো মিথ্যা মামলা করে আসামিদের ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে। আসামিরা ন্যায় বিচার পাননি। এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।