রাজধানীর কাওলাতে অত্যাধুনিক হেলিপ্যাড স্থাপিত হবে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্পের অধীনে এ হেলিপ্যাডটি হবে। প্রকল্প পরিকল্পনায় কাওলাতে হেলিপ্যাড নির্মাণের উল্লেখ না থাকলেও নতুন করে প্রকল্প পরিকল্পনায় হেলিপ্যাড স্থাপন করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার সরকারি নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ও তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যে এলাকাটিতে বেসরকারি হেলিপ্যাড রয়েছে সেটি নির্মিতব্য তৃতীয় টার্মিনালের আওতাধীন এলাকায় রয়েছে। তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্প কার্যক্রম সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হলে হেলিপ্যাডের স্থানে সেখানে অ্যাপ্রোন (প্লেন পার্ক করার জায়গা) থাকবে। ফলে হেলিপ্যাডটি এ স্থান থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। এ কারণে হেলিপ্যাড নির্মাণের জন্য প্রাথমিকভাবে কাওলাতেই সাইট সিলেকশন করা হয়েছে। নতুন করে পরিকল্পনায় যুক্ত করা হলে বর্ধিত অর্থের পরিমাণ কত হবে তার হিসাব নিকাশ চলছে বলে জানা গেছে।
শনিবার (৫ জুন) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে এসে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে বলে জানান। তিনি বলেন, ২০২১ সালের জুনে এই টার্মিনালের ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল, তবে এখন পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ।
তিনি জানান, বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে মেট্রো রেল। তৈরি হবে পৃথক একটি স্টেশনও। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে আসা যাত্রীরা বিমানবন্দর থেকে বের না হয়েই মেট্রো রেলে করে নিজেদের গন্তব্যে যেতে পারবেন। এছাড়া ঢাকার যেকোনো স্টেশন থেকে মেট্রো রেলের মাধ্যমে সরাসরি বিমানবন্দরে ডিপার্চার বা বহির্গমন এলাকায় যাওয়া যাবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই টার্মিনালের আকার হবে বর্তমান বিমানবন্দরের দুই গুণেরও বেশি। টার্মিনালের সঙ্গে আশকোনার হজক্যাম্প থেকে একটি টানেল যুক্ত থাকবে। এর মাধ্যমে হাজিরা হজক্যাম্প থেকে সরাসরি বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে পারবেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বহুমাত্রিক নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে পা রেখেছে বাংলাদেশ। এরই অংশ হিসেবে দৃষ্টিনন্দন তৃতীয় টার্মিনাল তৈরি হচ্ছে। টার্মিনালটি হবে সম্পূর্ণ অটোমেটেড। দৃষ্টিনন্দন এই বিমানবন্দরে পা রেখেই একজন বিদেশি বাংলাদেশের সৌন্দর্য অনুধাবন করতে পারবে। উল্লেখ্য, পাঁচ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারের এ টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি প্লেন রাখার জায়গা করা হয়েছে। টার্মিনাল ভবন হবে দুই লাখ ৩০ হাজার স্কয়ার মিটারের। যার ভেতরে থাকবে পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য ও অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির ছোঁয়া। ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কাজের উদ্বোধন করেন।