দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুরোধে টানা দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউন শেষে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার লকডাউন শিথিল করেছে সরকার। লকডাউন শিথিলতার প্রথম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কজুড়ে তীব্র যানজট থাকলেও আজ (শুক্রবার) দ্বিতীয় দিনে কোথাও তীব্র যানজট আবার কোথাও ফাঁকা দেখা যায়।
কঠোর লকডাউন চলাকালে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়ার বিধিনিষেধ থাকলেও শিথিলতা আসায় প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে হাজার হাজার মানুষ এখন বাইরে বের হচ্ছেন। অনেকেই নাড়ির টানে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। কেউবা মার্কেটিং করতে ছুটছেন ফুটপাত থেকে শুরু করে ছোটবড় শপিংমল ও দোকানপাটে। মার্কেটের আশপাশের রাস্তায় বেশি যানজট দেখা যায়।
শুক্রবার (১৬ জুলাই) সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাত্র দুদিন আগেও কঠোর লকডাউনের কারণে গণপরিবহন, মার্কেট-শপিংমলসহ সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে সড়ক ও মহাসড়কে যান চলাচল সীমিত থাকলেও গতকাল থেকে রাস্তায় গণপরিবহন ও মার্কেট খুলে যাওয়ায় যানবাহনের সংখ্যা অনেকগুণ বেড়েছে।
পাশাপাশি রাস্তায় বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিও লক্ষণীয়। শুক্রবার পুরান ঢাকার মিটফোর্ড, সদরঘাট, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক যানজট দেখা যায়। এসব এলাকার বিভিন্ন পাইকারি মার্কেট আজ খোলা থাকায় যানজট বেশি হয়। কোথাও কোথাও ১৫ মিনিটের পথ যেতে এক ঘণ্টা থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লেগে যায়। প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন যানবাহনের মানুষকে গরমে ঘামে ভিজতে দেখা যায়। সদরঘাট থেকে গুলিস্তান এলাকায় গণপরিবহনের পাশাপাশি ঘোড়ার গাড়িতেও লোকজন চলাচল করতে দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, টাকার অভাবে দরিদ্র একটি শিশুর মা ঘোড়ার গাড়িতে উঠতে পারছিলেন না। ঘোড়ার সহিস দয়াপরবশ হয়ে তাকে পিছনের পাদানিতে বসতে দেয়। মেয়েটিকে একহাতে কোলের শিশুসন্তান ও আরেক হাতে পাদানির হাতল ধরে বসতে দেখা যায় তাকে। এ দৃশ্যটি রাস্তার সবার নজর কাড়ে। সদরঘাট থেকে গুলিস্তানগামী রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট দেখা যায়।
পুরান ঢাকার বেশিরভাগ রাস্তায় যানজট থাকলেও শহরের অন্যান্য রাস্তায় যানজট অপেক্ষাকৃত কম ছিল। তবে মার্কেট এলাকার আশপাশের রাস্তায় বেশি ভিড় লক্ষ করা যায়।
স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতির এ সময়ে লকডাউন তুলে নেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, লকডাউন অব্যাহত থাকলে খুব ভালো হতো। লকডাউন তুলে নেয়ার পর স্বাস্থ্যবিধি না মানলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।