Image default
বাংলাদেশ

রাজশাহীতে ওয়াসার পানিসহ নিত্যপণ্যের দাম দ্রুত না কমালে হরতালের হুঁশিয়ারি বিএনপির

দ্রুত সময়ের মধ্যে ওয়াসার পানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম না কমালে রাজশাহীতে সব শ্রেণির মানুষকে নিয়ে হরতালের ডাক দেবে বলে বিএনপি হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

ওয়াসার পানির দাম তিন গুণ বাড়ানোর প্রতিবাদে আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের মালোপাড়া এলাকায় রাজশাহী মহানগর বিএনপি মানববন্ধন করে। এ সময় দলের নেতা-কর্মীরা এ হুঁশিয়ারি দেন। এ সময় বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী ঈশা, সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সরকার, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমানসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা।

মানববন্ধনে বিএনপির নেতারা বলেন, ওয়াসার পানি পান করা যায় না। পেটে নানা রকম অসুখ হয়। এই পানিতে মারাত্মক ব্যাকটেরিয়া কলিফর্ম পাওয়া গেছে। এই পানিতে গোসল আর ধোয়ামোছার কাজ ছাড়া কিছুই করা যায় না। সেই পানির দাম তিন গুণ বৃদ্ধি করা অযৌক্তিক। ওয়াসা যদি রাজশাহীর মানুষের কথা না ভেবে এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে, তবে রাজপথে আন্দোলন চলবে। রাজশাহীতে কোনো শিল্পকারখানা নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের মধ্যে নাভিশ্বাস উঠে গেছে। রাজশাহীর মানুষের এত ক্রয়ক্ষমতা নেই যে ওয়াসার পানির বিল ৫০০–এর জায়গায় ১৫০০ টাকা পরিশোধ করবে। ওয়াসা তাদের সিদ্ধান্ত থেকে না সরে এলে রাজশাহীতে লাগাতার আন্দোলন হবে। ওয়াসার পানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম না কমালে রাজশাহীতে সব শ্রেণির মানুষকে নিয়ে বিএনপি হরতালের ডাক দেবে।

রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী বলেন, এই সরকার ইচ্ছেমতো যখন খুশি তখন সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। সরকার ইতিপূর্বে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। ডিজেলের দাম একলাফে ১৫ টাকা বাড়িয়েছে। তেলের দামও বাড়ানো হলো ইচ্ছেমতো। খাদ্যমন্ত্রী বলছেন, চালের দাম বাড়ার কোনো আশঙ্কা নেই। অথচ দাম বেড়েই চলেছে। যে চাল একসময় ২০ টাকা কেজি ছিল, তা এখন ৬০ টাকায় কিনে খেতে হচ্ছে। তাহলে এই সরকারকে কি রাখা যায়?

এরশাদ আলী আরও বলেন, পানির অপর নাম জীবন। কিন্তু ওয়াসার পানি দেখলে বোঝা যায় পানির অপর নাম জীবন নয়। এই পানি খাওয়া যায় না। দুর্গন্ধ বের হয়। তবুও মানুষ সহ্য করে এই পানি ব্যবহার করে মূল্য পরিশোধ করেছে। কিন্তু পানির মূল্য তিন গুণ বাড়ালে তা পরিশোধ করার সক্ষমতা মানুষের নেই। ওয়াসা কর্তৃপক্ষ পানির মূল্যবৃদ্ধির জন্য রাজশাহীর কারও সঙ্গে আলোচনা করেনি।

মানববন্ধন থেকে দ্রুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাওয়া হয়।

গত জানুয়ারির শুরুতে রাজশাহী নগরে পানির দাম তিন গুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা)। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে ও পত্রিকায় বিষয়টি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রচার করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে নগরবাসীর পানির জন্য অতিরিক্ত তিন গুণ মূল্য পরিশোধ করার কথা। এর প্রতিবাদে ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে রাজশাহীতে আন্দোলন চলছে। ৭ ফেব্রুয়ারি পানির দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন করে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ। ৯ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী ওয়ার্কার্স পার্টি মানববন্ধন করে। প্রতিদিন নগরে সকাল–বিকেল গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণসহ সমাবেশও করেছে তারা। গত ১৭ জানুয়ারি তারা সমাবেশ করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপিও দিয়েছে।

Related posts

জাতীয় সঙ্গীতের অবহেলিত সুরকার

News Desk

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: খুলনায় প্রস্তুত ৪০৯ আশ্রয় কেন্দ্র

News Desk

দেশে দুর্ভিক্ষ দেখছেন গয়েশ্বর রায়

News Desk

Leave a Comment